link text

Breaking Posts

6/trending/recent

Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

ঋণের ফাঁদেই দিন ঘনাচ্ছে মমতার #Economy-&-Politics-of-West-Bengal

CAG সতর্ক করেছে, হিসেবনিকেষ করে ঋণ না নিলে রাজ্য ঋণের ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে। কারণ আগামী ৭ বছরের মধ্যে ঋণের ৬১% (১ লক্ষ ৬৭ হাজার কোটি টাকার বেশি) শোধ করতে হবে। ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরের মধ্যে ঋণ পৌঁছে যেতে পারে সাড়ে ৪ লক্ষ কোটি টাকায়। 
৩১ মার্চ, ২০২২ প্রকাশিত CAG রিপোর্ট বলছে, ৩১ মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত সরকারের দেনা ৩ লক্ষ ৯ হাজার কোটি টাকা। ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের বাজেট বরাদ্দের (২ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকা) চেয়ে অনেক বেশি। 
CAG রিপোর্ট বলছে, ২০১৬ থেকে ২০২১, এই ৫ বছরে GDP বেড়েছে ৯.১৯% হারে আর দেনা বেড়েছে ১১.৪৯% হারে।
না। আমাদের অভাগা পিছিয়ে পড়া রাজ্যের কথা বলছি না। ছবিটা গুজরাটের, উন্নয়নের মডেল হিসেবে যে রাজ্যকে চেনানো হয়। আমাদের রাজ্যের ঋণ নিয়ে বিস্তর চেঁচামেচি করে বিজেপি। এই হাল তাঁদের মহান নেতার রাজ্য গুজরাটের।
১৯৯৫ সালে বিজেপি গুজরাটের ক্ষমতায় আসে। স্বাধীনতার পর থেকে ওই ৪৮ বছরে গুজরাটের দেনা হয়েছিল ১০ হাজার কোটি (বছরে গড়ে ২০৮ কোটি টাকা)। ২০০১ সালে নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রী হন। তার আগে বিজেপি সরকারের প্রথম ৬ বছরে (১৯৯৫-২০০১) দেনা ৩৫ হাজার ৩০১ কোটি বেড়ে হয় ৪৫ হাজার ৩০১ কোটি টাকা (প্রতি বছর বাড়ে গড়ে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা)। মোদী মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে প্রধানমন্ত্রী হন ২০১৪ সালে। ওই ১৩ বছরে গুজরাট সরকারের দেনা ১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা বেড়ে হয় ২ লক্ষ ২১ হাজার কোটি টাকা (প্রতি বছর বাড়ে গড়ে প্রায় ১৩ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা)। তারপরের ৭ বছরে ৮৮ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে (প্রতি বছর বাড়ে গড়ে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা)। (গুজরাটের ঋণ-চিত্র)
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক হিসেব দিয়েছে, রাজ্যগুলোর মধ্যে মোট উৎপাদনের শতাংশের হিসেবে সবচেয়ে বেশি ঋণগ্রস্ত পঞ্জাব (৫৩.৩%), রাজস্থান (৩৯.৮%), পশ্চিমবঙ্গ (৩৮.৮%), কেরল (৩৮.৩%), এবং অন্ধ্রপ্রদেশ (৩৭.৬%)। ঋণের ভার তীব্র উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, হরিয়ানারও। টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি ঋণ উত্তরপ্রদেশের।
গুজরাট সম্পর্কে কোনও কথা বলেনি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। অথচ গুজরাটকেই শুনতে হয়েছে ঋণের ফাঁদে পড়ার সতর্কবার্তা।
চা ঘুগনি তেলেভাজা কচুরিপানার অর্থনীতি লেখাটা পড়ে অনেকে বলেছেন, বড় বিনিয়োগ ছাড়া কিছু হবে না। কিন্তু আমি মমতার দালালি করতে গিয়ে নাকি সহজ অর্থনীতির কথাটাই অস্বীকার করছি। ভারতের যে রাজ্যে সবচেয়ে বেশি বড় বড় বিনিয়োগ সেখানকার অর্থনীতির কথাটা বললাম। গুজরাটের অর্থনীতি নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি অন্য একটি লেখায় পড়তে এখানে ক্লিক করুন। অনেকে প্রশ্ন করেছেন, চা ঘুগনি তেলেভাজা কচুরিপানার উপর ভর করেই অর্থনীতি চলবে? না। ওটা পাগলের ভাবনা। সে সম্পর্কে কিছু কথা এই লেখার শেষ পর্বে বলার চেষ্টা করব। বাকিটা লিখব পরের পর্বে। 
মোরবীর পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী। আছেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী

আপ, ‘খয়রাতি’ ও মোদী

‘আমাদের দেশে আজকাল খয়রাতির মাধ্যমে ভোট কেনার চেষ্টা হচ্ছে। এই সংস্কৃতি দেশের বিকাশের জন্য ঘাতকের মতো। এই খয়রাতি সংস্কৃতি সম্পর্কে দেশের যুবদের সতর্ক থাকা দরকার। এই সংস্কৃতি খুব খারাপ। রাজনৈতিক দলগুলি খালি ভাবে, আম জনতাকে বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ করে কিনে নেবে। দেশ থেকে খয়রাতি সংস্কৃতি সরিয়ে দিতে হবে। আমাদের সংস্কৃতি অন্য।’
কথাটা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। ইদানিং খয়রাতির রাজনীতি নিয়ে খুব কথা হচ্ছে। বিতর্ক হচ্ছে সারা দেশে। বিতর্ক হচ্ছে আমাদের রাজ্যেও। যেমন ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পকে অনেকেই ভিক্ষা দিয়ে ভোট কেনার ছক বলেই মনে করেন।
কথাটা কখন বললেন প্রধানমন্ত্রী?
দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপ সরকার নিখরচায় ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ দিচ্ছে। পঞ্জাবেও আপ সরকার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মেনে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত নিখরচায় বিদ্যুৎ দিচ্ছে। একই প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা গুজরাটেও ভোটযুদ্ধে নেমেছে। 
তারপরই প্রধানমন্ত্রী খয়রাতির রাজনীতির বিরুদ্ধে মুখ খুললেন। তারপরই সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হল। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক-নীতি আয়োগ-নির্বাচন কমিশন, একের পর এক সাংবিধানিক সংস্থা খয়রাতির রাজনীতি সম্পর্কে সরব হল। তবে সুপ্রিম কোর্ট খয়রাতির রাজনীতির বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েও স্পষ্ট বলেছে, জনকল্যাণ মূলক কর্মসূচি আর খয়রাতির রাজনীতি এক নয়। তাতে খয়রাতি ও জনকল্যাণ নিয়ে প্রয়োজনীয় বিতর্কের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশে গত বিধানসভা ভোটে বিজেপি ২ কোটি ট্যাব বা স্মার্টফোন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা মেধাবী কলেজছাত্রীদের বিনা মূল্যে স্কুটি দেওয়ার কথা বলেছিলেন। আমাদের রাজ্যের রূপশ্রী প্রকল্পের মতো যোগী রাজ্যেও গরিব পরিবারের মেয়েদের বিয়ের জন্য ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়ার ঘোষণা করেছিল বিজেপি। তার সঙ্গে হোলি ও দিওয়ালির সময় বিনা মূল্যে দুটো করে গ্যাস সিলিন্ডার, ‘মুখ্যমন্ত্রী কন্যা সুমঙ্গলা’ প্রকল্পে সাহায্য ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করার কথা বলা হয়েছিল। মনে রাখবেন, টাকার অঙ্কে রাজ্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেনা উত্তরপ্রদেশের
কেজরিওয়ালের দিল্লিতে বাস ও মেট্রোয় মহিলাদের ভাড়া দিতে হয় না। স্ট্যালিনের তামিলনাডুতেও বাসে মহিলাদের ভাড়া লাগে না। গত ভোটে উত্তরপ্রদেশে ৬০ বছরের বেশি মহিলাদের বিনা ভাড়ায় গণপরিবহণে যাতায়াতের কথা বলেছিল বিজেপি। ২০২১ বিধানসভা ভোটে আমাদের রাজ্যেও বিজেপি বিনা ভাড়ায় মহিলাদের বাসে যাতায়াতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
আপ বিনা মূল্যে বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা বলতেই সরব প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগে মোদীর বিজেপি কৃষকদের বিনা মূল্যে বিদ্যুৎ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিজেপির হাতে থাকা হিমাচল প্রদেশেও বিনা মূল্য বিদ্যুত্‍ দেওয়ার কথা বলেছে। বিনা মূল্যে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুত্‍, বিনা মূল্যে পানীয় জল, মেট্রো ও বাসে মহিলাদের বিনা মূল্যে যাতায়াতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে হায়দরাবাদের পুরভোটে লড়েছিল বিজেপি।
দিল্লিতে ৫৮ লক্ষ গৃহস্থ গ্রাহকের মধ্যে ৩০ লক্ষ বিনা মূল্যে এবং ১৬-১৭ লক্ষ অর্ধেক দামে বিদ্যুৎ পাচ্ছেন এখন। গুজরাটের ভোটে আপ বিনা মূল্যে বিদ্যুতের প্রতিশ্রুতি দিতেই এত হইচই কেন শুরু হয়েছে, সেটা নিশ্চয়ই স্পষ্ট। বোঝাই যায়, কেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনা দিল্লিতে বিনা মূল্যে বিদ্যুৎ প্রকল্প ভেস্তে দেওয়ার কাজে লেগে পড়েছেন। 
মোরবীতে দুর্ঘটনাস্থলে প্রধানমন্ত্রী

মোদীর ‘খয়রাতি’

একটা ধারণা তৈরি করানো হয়েছে, ভর্তুকি বাজে খরচ। CAG রিপোর্ট বলছে, বিভিন্ন রাজ্য সরকারের মোট খরচের মধ্যে ভর্তুকি ২০২১-২২ সালে বেড়েছে ১১.২%। সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি বেড়েছে ঝাড়খণ্ড, কেরল, ওডিশা, তেলঙ্গনা ও উত্তর প্রদেশে। গুজরাট, পঞ্জাব, ছত্তিসগড়েও ভর্তুকি মোট খরচের ১০ শতাংশের বেশি।
সারে ভর্তুকি কমছে। পেট্রোল ডিজেল কেরোসিনে ভর্তুকি নেই। রান্নার গ্যাসের ভর্তুকিও অনেক কমেছে। কারণ ওগুলো ‘বাজে খরচ’।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে কর্পোরেট সংস্থার কর কমায় কেন্দ্র। সেজন্য ২ বছরে কেন্দ্রের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে ১.৮৪ লক্ষ কোটি টাকা। আর ২০১৪ থেকে ২০২১, এই ৭ বছরে শিল্পপতিদের ১২ লক্ষ কোটি টাকা ব্যাঙ্ক ঋণ মকুব করা হয়েছে। শুধু বিজেপি নয়, কংগ্রেস দেশ চালানোর সময় একই মনোভাব নিয়ে চলেছে। 
তেলা মাথায় তেল দেওয়াই তো আসলে খয়রাতি। কিন্তু সেটাকেই চালানো হচ্ছে উন্নয়ন বলে। আর জনকল্যাণে খরচকে বলা হচ্ছে খয়রাতি।
খাদ্য সুরক্ষা আইন চালু হয়েছিল মনমোহন সিং সরকারের সময়। যেমন শিক্ষাকে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। যেমন চালু হয়েছিল গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা আইন (১০০ দিনের প্রকল্প নামে বেশি পরিচিত)। 
খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় থাকা ৮০ কোটি মানুষকে প্রতি মাসে মাথাপিছু অতিরিক্ত পাঁচ কিলোগ্রাম চাল বা গম দিতে কোভিড পর্বে চালু হয় প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা। এর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল গত সেপ্টেম্বরে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক বলেছিল, ভাঁড়ারের হাল খারাপ, তাই এই প্রকল্পকে আর টানা উচিত নয়। গত দু’বছরে প্রায় ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। খাদ্য সুরক্ষায় এমনিতেই পাঁচ সদস্যের পরিবার ২-৩ টাকা কেজি দরে ২৫ কেজি খাদ্যশস্য পাচ্ছে। আরও ২৫ কেজি খাদ্যশস্য বিনামূল্যে দেওয়ার প্রয়োজন আছে কিনা, সেই প্রশ্ন তুলেছিল নির্মলা সীতারামনের দফতর। সতর্ক করেছিল, ধান-গমের ফলন কম হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ালে মজুত চাল-গমের পরিমাণ ন্যূনতম মজুতের বিপদসীমায় পৌঁছে যেতে পারে।
তারপরও প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হল ডিসেম্বর পর্যন্ত। অর্থমন্ত্রক ভাঁড়ার খালি হয়ে যাওয়ার সতর্কবার্তা দেওয়ার পরও প্রকল্প টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাতে অর্থনীতি বিপদে পড়বে না? ডিসেম্বরে গুজরাট, হিমাচল প্রদেশের ভোট আছে। তার আগে বন্ধ করা যায় বলুন? 
খাদ্য সুরক্ষা আইনের বাইরে থাকা মানুষদেরও সস্তায় রেশন দেওয়ায় মমতা ব্যানার্জির বিস্তর সমালোচনা করে বিজেপি। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, নীতি আয়োগের সুপারিশ মেনে একই প্রকল্প চালুর সিদ্ধান্ত নিতে পারে মোদী সরকার। লোকসভা ভোট তো ২০২৪ সালে। 
ভোট তো বড় বালাই। তাই নীতিন গড়করিকে ফাঁকি দিয়ে মহারাষ্ট্র থেকে ১.৮০ লক্ষ কোটি টাকার চারটি বিনিয়োগ টেনে নিয়ে যেতে হয় নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের গুজরাটে। সত্যি সত্যি সুখের স্বর্গ হলে তো মহারাষ্ট্রের মুখের গ্রাস কেড়ে ভোটের গুজরাটে চমক দিতে হয় না।   
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, খয়রাতি খয়রাতি বলে চেঁচালেও দিব্যি সেই কাজটাই করে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর দল বিজেপি। বরং শিল্পপতিদের মন ভরিয়ে আসল খয়রাতি তিনিই করছেন।

জালে জড়াচ্ছে বাংলা

আজকের সময় উন্নয়ন মানে শুধু আর্থিক উন্নতি নয়, উন্নয়ন মানে মানব সম্পদ উন্নয়ন। মাথাপিছু আয়কে এখন আর উন্নয়নের একমাত্র মাপকাঠি ধরা হয় না। পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদ মহবুব উল হকের দেখানো রাস্তায় রাষ্ট্রসঙ্ঘ বিভিন্ন দেশের উন্নয়নের হাল প্রকাশ করে। জীবনমানের কতটা উন্নতি ঘটল, আজকের সময়ে উন্নয়নের ভাবনায় সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। দুনিয়ার অর্থনীতিতে এখন পঞ্চম বৃহত্তম দেশ হলেও ভারত মানবসম্পদ উন্নয়নের বিচারে দুনিয়ার ১৯১ দেশের মধ্যে ১৩২। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা ৭৩, চিন ৭৯, ভুটান ১২৭, বাংলাদেশ ১২৯, পাকিস্তান ১৬১, মায়ানমার ১৪৯ এবং নেপাল ১৪৩ নম্বরে।
দেখা যাবে, মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে ভারতের এগিয়ে থাকা রাজ্যগুলো দারিদ্র, বেকারি, নিরক্ষরতা ইত্যাদি সামাজিক মাপকাঠিতে একই রকম এগিয়ে নয়। এই মুহূর্তে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য সার্বিক উন্নয়নের বিভিন্ন মডেল নিয়ে চলছে। তারমধ্যে কেরল, তামিলনাড়ু, ওডিশা, দিল্লি, ছত্তিসগড়ের উন্নয়ন মডেল নিয়ে বেশি কথা হচ্ছে।
মোটামুটি সব মডেলেই নগদ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। যেমন কেন্দ্রের ‘কৃষক সম্মান নিধি’, তেলঙ্গনার ‘রায়থু বন্ধু’, ওডিশার ‘কালিয়া’ কিংবা পশ্চিমবঙ্গের ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ ইত্যাদি। রাজ্য সরকারের নগদ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিজেপি সরব। কিন্তু ২০১৯ লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্র কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পে বছরে ৬ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গত বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যের কৃষকদের বছরে ১০ হাজার এবং মত্‍স্যজীবীদের ৬ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলেছিল বিজেপি। কোভিড পরবর্তী পর্বে প্রান্তিক মানুষদের নগদ দেওয়ার প্রয়োজনও আছে।
এখানেই একটা সঙ্গত প্রশ্ন উঠছে। এরকম নগদ টাকা দেওয়ার প্রকল্প চালাতে গিয়ে যদি ভাঁড়ার শূন্য হয়ে যায়, তাহলে? যেমনটা হচ্ছে আমাদের রাজ্যে। মুখ্যমন্ত্রী বারবারই বলছেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো প্রকল্পের টাকার জোগাড় করতে গিয়ে হিমসিম দশা। তাই অন্যান্য কাজে টাকা দেওয়া যাচ্ছে না। বাস্তবে সেটা দেখাও যাচ্ছে। অবসর নেওয়ার পর কর্মচারিদের প্রাপ্য বকেয়া থেকে যাচ্ছে। কন্ট্রাক্টরদের কোটি কোটি টাকা বাকি পড়ে থাকছে। তেল কেনার টাকা থাকছে না বলে অনেক রুটে বাস চলাচল হঠাৎ হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। গাদা গাদা বাস ডিপোয় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। এরকম অসংখ্য উদাহরণ আমাদের সবার রোজকার জীবনে আছে। ভর্তুকি ৭% থেকে কমিয়ে ৪% করে দিয়েছে সরকার। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ ক্রমশ বাড়ছে।
একটা ভয়ঙ্কর রাস্তায় চলছে রাজ্য সরকার। দেনার পাহাড় জমছে। ২০১১ সালে মমতা ব্যানার্জি সরকারে আসার সময় মোট দেনা ছিল ১ লক্ষ ৯২ হাজার কোটি টাকা। তা নিয়ে তখন খুব হইচই করতেন মমতা। এই আর্থিক বছর শেষে, মানে ৩১ মার্চ, ২০২৩ মোট ঋণ হবে ৫ লক্ষ ৮৬ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা। মানে স্বাধীনতার পর ৬৪ বছরে ঋণ হয়েছিল ১.৯২ লক্ষ কোটি টাকা। পরের ১২ বছরে তা বেড়েছে প্রায় ৪ লক্ষ কোটি টাকা। 
এখন নতুন ঋণের প্রায় ৭২% পুরানো ঋণ মেটাতে চলে যাচ্ছে। ঋণের সুদ-আসল মেটাতে খরচ হচ্ছে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা, মোট বাজেট বরাদ্দের প্রায় এক তৃতীয়াংশ। বেতন ও অবসর ভাতা বাবদ দিতে হয় ৮৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।
অঙ্কে চোখ রাখলে বোঝা যাবে, গুজরাটের মতোই ঋণের জালে জড়ানোর পথে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গও।
দেনা বাড়লেই যে বিপদ হবে, তা-ও নয়। খরচ মূলধনী খাতে (Capital Expenditure) হলে নতুন সম্পদ তৈরি হবে। তাতে আয় বাড়বে। যেমন, ওডিশাতে ৭০ লক্ষ মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাজে যুক্ত। সরকার তাদের বিনা সুদে ৫ লক্ষ টাকা ঋণ দিচ্ছে। তাতে সম্পদ তৈরি হচ্ছে। সরকারের আয় বাড়ছে। মহিলারা ঋণের টাকা ফেরাচ্ছেন। তাতে কোষাগারেও টান পড়ছে না। মহিলাদের আয় হলে তাঁদের কেনার ক্ষমতা বাড়বে। তাতে বাজার চাঙা হবে এবং সরকারের আয় বাড়বে। ১৯৯৯ সালের সুপার সাইক্লোনে বিধ্বস্ত ওডিশার বৃদ্ধি হচ্ছে সারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত। সেখানে দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষ ৬৩% থেকে কমে হয়েছে ২৯%। মাস খানেক আগে মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সরকারি দফতরে আরও কোনও ঠিকাকর্মী থাকবে না। সারা দেশে অনন্য নজির।
আমাদের রাজ্যে ঠিক উল্টো। সরকারি দফতরগুলোয় লক্ষ লক্ষ পদ ফাঁকা। কাজ চালানো হচ্ছে চুক্তিভিত্তিক কর্মী দিয়ে। এমনকী পুলিশেরও মূল বাহিনী এখন চুক্তিভিত্তিক সিভিল ভলান্টিয়ার। ঠিকাকর্মী দিয়ে কাজের অভ্যাস অবশয শুরু হয়েছে বামফ্রন্ট সরকারের আমল থেকেই। বিভিন্ন রাজ্যেও আছে সেই বদভ্যাস।  
রাজ্য সরকার বলছে, ২০১১ সালে যত রাজস্ব আদায় হত এখন হয় তার ৪ গুণ। কথাটা ভুল নয়। তার মূল উৎস মাত্র দুটো, পেট্রোল-ডিজেলে কর এবং মদে কর। অর্থাৎ সম্পদ সৃষ্টি হচ্ছে না। আর আয় যত বাড়ছে তার চেয়ে বেশি বাড়ছে ব্যয়। তাই দেনা ক্রমশ বাড়ছে।
বিতর্ক শুরু হয়েছে, সরকার কি ঋণ নেওয়ার লক্ষণরেখা পেরিয়ে যাচ্ছে? রাজ্য সরকার দু ভাবে ঋণ করতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে এবং খোলাবাজার থেকে। খোলাবাজার থেকে ঋণও ইচ্ছেমতো নেওয়া যায় না। সেজন্য আছে কেন্দ্রের আর্থিক শৃঙ্খলা ও বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ (FRBM) আইন। সেই আইন অনুযায়ী রাজ্যের মোট উৎপাদনের (GSDP) ৩% পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যায়। ২০১০ সালে রাজ্য বিধানসভায় সেই আইন পাশ করেছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সরকার। কোভিডপর্বে ৫% পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এবছরও রাজ্য সরকার সীমা ৫% করার দাবি করেছিল।
৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। দেখা যায়, তারপর কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলোকে আর রাজ্যের দেওয়া নামে ডাকছে না সরকার। আর সেপ্টেম্বরে ঋণ নেওয়ার উর্ধ্বসীমা GSDP-র ৪% করতে বিধানসভায় FRBM আইন সংশোধন করা হয়। বাজেট অনুযায়ী, রাজ্যের মোট উৎপাদন (GSDP) ১৭,১৩,১৫৪ কোটি টাকা। তার ৪% মানে প্রায় ৬৯ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত ধার নিতে পারে রাজ্য সরকার। ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্য ধার করেছে সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা। এই আর্থিক বছরে সরকার সব মিলিয়ে ৭৩,২৮৬ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব রেখেছে বাজেটে।
রাজ্যের ভাঁড়ারে খবর প্রকাশ্যে আসা বেশ মুশকিলের। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করছেন, কেন্দ্রের কাজে ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণের প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য। ওই টাকা না পেলে ডিসেম্বরের পরে সরকারি কর্মচারিদের বেতন দেওয়াও অসম্ভব হয়ে পড়বে।

দেনার চোরাবালিতে তলাচ্ছে সরকার

আমাদের রাজ্যে সবচেয়ে বড় বিপদ হচ্ছে সরকারের খরচের বেশির ভাগটাই হচ্ছে রাজস্ব খাতে (Revenue Expenditure)। মমতা ব্যানার্জি সরকারের প্রথম দিকে প্রচুর রাস্তা তৈরি হয়েছিল, বিশেষত গ্রামের দিকে। এখন সারানোর কাজও করা যাচ্ছে না। টাকার অভাবে পূর্ত দফতরের বাজেট কাঁটছাঁট হচ্ছে। কিন্তু বছরে বেশ কয়েকবার নীল-সাদা রং বন্ধ হয়নি। অনেকে বলবেন, চারপাশটা সুন্দর লাগে। সংসার চালানো মানুষ জানেন, কখন ঘর রং করাব সেটা পকেটের হালের উপর নির্ভর করে। রাস্তায় রাস্তায় অপ্রয়োজনীয় ভাবে প্রচুর আলো লাগানো হয়েছে (এখন অবশ্য ত্রিফলা বিদায় নিয়েছে)। তাতে বাজে খরচ যেমন হচ্ছে তেমনই আলো দূষণও হচ্ছে। তাতে গাছ, পাখি ইত্যাদির বিপদ হচ্ছে।   ক্লাবগুলোকে বছর বছর লক্ষ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। তাতে ক্লাবগুলো পার্টি অফিসে পরিণত হয়। তাতে ভোট করানোর বাহিনী পেতে সুবিধা হয়। কিন্তু সামাজিক সংস্থা হিসেবে ক্লাবগুলো তার ভূমিকা হারায়। আর ওই টাকা দিয়ে কোনও স্মপদও তৈরি হয় না যাতে অর্থনীতির লাভ হয়।
ক্লাবগুলোকে বছর বছর দুর্গাপুজোর সময় ৫০-৬০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে। কোভিড পরিস্থিতিতে তা-ও কোনও অর্থ খুঁজে পাওয়া যেকে পারে। কিন্তু এবার? এবছর খরচ হয়েছে প্রায় ২৬০ কোটি টাকা পুজো। দেখা যাচ্ছে, প্রতি বছরই বাজেট বরাদ্দের চেয়েও বেশি খরচ করছে সরকার। দুর্গাপুজো রাজ্যের অর্থনীতিতে বিপুল সম্ভাবনার জন্ম দিতে পারে। এসম্পর্কে আমার ভাবনা দুই পর্বে লিখেছি (পড়তে ক্লিক করুন এখানে এবং এখানে)। সরকার সেই অর্থনীতির জন্য ২৬০ কোটি টাকা দিতে পারলে তো ভালই। কিন্তু পুজো কমিটিকে অনুদান দিলে তো অর্থনৈতিক লাভ হয় না। ওই টাকা পুজো অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন পেশার মানুষকে ব্যবসা করার কাজে দেওয়া যেতে পারত। মুখ্যমন্ত্রী যে চা-ঘুগনি-তেলেভাজার অর্থনীতির কথা বলছেন, ওই ২৬০ কোটি টাকাটা সে জন্য দিলেও কাজের কাজ হত। অন্য একটি লেখায়  দিল্লির স্কুল ছাত্রছাত্রীদের উদ্যোগপতি বানাতে সরকারি প্রকল্পের কথা বলেছিলাম (পড়তে এখানে ক্লিক করুন)। সে রকম পরিকল্পনার কথাও ভাবা যেত।
ছাত্রছাত্রীদের সাইকেল-জামা-জুতো দেওয়া বা ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প অবশ্যই মানবসম্পদ তৈরি করে। অর্থনীতিতে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তার সঙ্গে তো সার্বিক দারিদ্রে রাশ টানতে হবে। জাতীয় পরিবার ও স্বাস্থ্য সমীক্ষা অনুযায়ী সারা দেশে বাল্যবিবাহেরর হার সবচেয়ে বেশি আমাদের রাজ্যে, ৪১.৬%। সারা দেশে এই হার ২৩.৩%। তা-ও ওই হিসেব ২০১৯ সালের। কোভিড পরিস্থিতিতে অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। কাজের সুযোগ তৈরি করে আয় বাড়ানোর ব্যবস্থা করা না গেলে এই ছবি বদলাবে না।
আরও অনেক সামাজিক সরকারি প্রকল্প আছে। সেসবের বিস্তারিতের মধ্যে আর যাচ্ছি না। শুধু কয়েকটা কতা বলতে চাইছি ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প সম্পর্কে। প্রকল্পটির গুরুত্ব সম্পর্কে আমার অন্তত কোনও সন্দেহ নেই। কয়েক দিন আগে স্কচ পুরস্কারও পেয়েছে এই প্রকল্প। নগদ দেওয়ার এত বড় প্রকল্প আর নেই। কিন্তু প্রকল্পটি ব্যমেরাং হবে কিনা, সেটা নির্ভর করছে আর্থিক পরিস্থিতির উপর। মহিলারা হাতে যে নগদ পাচ্ছেন তা দিয়ে কেনাকাটা করছেন। তাতে GST আদায় খানিকটা বাড়ছে। মানে সরকারের আয় সামান্য বাড়ছে। কিন্তু সম্পদ তৈরি না হলে শুধু কেনার ক্ষমতা বাড়িয়ে লাভ নেই। বরং ক্ষতি আছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই তো বলছেন, এই প্রকল্পের খরচ জোগাড় করতে গিয়ে নাজেহাল দশা। অন্য উন্নয়নের কাজে টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। পূর্ত, উচ্চশিক্ষা খাতে বিপুল ছাঁটাই হচ্ছে। এমনকী স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের মতো প্রকল্পেও বরাদ্দ কমছে। শোনা যায়, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকাও নাকি ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ সামলাতে ঢেলে দেওয়া হচ্ছে। ফলে কেন্দ্র ১০০ দিনের কাজ সহ বেশ কিছু প্রকল্পে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিচ্ছে। সেটা অর্থনীতিতে আরেক ধাক্কা।
শুধু ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পেই খরচ হচ্ছে বছরে ১৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। ওডিশার ঢঙে ওই টাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দিলে ফল কী হতে পারত? বামফ্রন্ট সরকার তো আমাদের রাজ্যেও সে কাজ শুরু করেছিল। তার বদলে ওই টাকা নগদ দিয়ে মহিলাদের পরনির্ভর করে দেওয়া হচ্ছে।
তারপর আছে সীমাহীন দুর্নীতি। দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার সরকারি ক্ষেত্রে দুর্নীতিতে রাশ টেনে বাজেটের আয়তন প্রায় তিন গুণ করেছে। আর আমাদের রাজ্যে দুর্নীতি যেন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। প্রশাসন তো আছেই, তার চেয়েও বেশি আছেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও শাসক দলের নেতারা। উন্নয়নে বরাদ্দ সরকারের কোটি কোটি টাকা তাঁদের পকেটে ঢুকছে।
সব মিলিয়ে ফাঁস ক্রমশ চেপে বসছে। তবু মমতা ব্যানার্জি ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ ইত্যাদি বন্ধ করতে নারাজ। হয়তো তিনি ভাবছেন, ওইসব প্রকল্পের কাচা টাকা পেয়ে ভোটাররা তাঁর পাশে থেকেছেন। বিরোধীরাও বলেন, ‘ভিক্ষা’ দিয়ে ভোট কিনছে সরকার। শাসক আর বিরোধীদের সাধারণ মানুষ সম্পর্কে ‘শ্রদ্ধা’ দেখলে গা ঘিনঘিন করে।
সব সময় মানুষই ইতিহাস তৈরি করেন। ওই সরকারি প্রকল্পগুলোর জন্যই মমতা ২০২১ ভোটে জেতেননি। দেনার পাহাড় তৈরি করে ওই প্রকল্পগুলো চালিয়ে নিয়ে গেলেও মমতা বাঁচবেন না।    ইতিহাস বলে, রাজকোষ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে আজ পর্যন্ত কোনও সরকার টিকতে পারেনি। মমতাও ব্যতিক্রম হতে পারবে না। এই জন্যই ২০২১ সালে ভোটের ফল বেরনোর পর থেকেই বলে আসছি, দিন শেষ মমতার। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Top Post Ad