link text

Breaking Posts

6/trending/recent

Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

WB violence 'নবীর সম্মান', 'দুধেল গাই' এবং 'হিন্দুত্বের নূপুর' সম্পর্কে কয়েকটি কথা

হিংসার আগুন
কথায় বলে, ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পায়।

আমি উদ্বাস্তু বাড়ির ছেলে। তাই সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে ভয় পাই। রাগ হয়। কষ্ট হয়। আমার বাপ-ঠাকুরদাদের কাছে শোনা অভিজ্ঞতা থেকে শিখেছি, কোনও ধর্ম দেশভাগ করেনি মানে মুসলমানদের জন্য আমার পরিবারকে উদ্বাস্তু হতে হয়নি। এরজন্য দায়ী, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি। তার কোনও ধর্ম ভাগ হয় না। হিন্দু-মুসলিম মৌলবাদ হাত মিলিয়ে চলে। একে অন্যকে সাহায্য করে। আমাদের উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির দুই জনক বিনায়ক দামোদর সাভারকার এবং মহম্মদ আলি জিন্নাহ। তাঁরা দুজনই কোনও ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন না, দুজনই ছিলেন নাস্তিক। ধর্ম আর ধর্মের নামে রাজনীতি সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস। 

ঠাকুরদা-ঠাকুমার সঙ্গেই ওপার বাংলা থেকে চলে আসতে হয়েছিল আমার বাবা-কাকা-পিসিদেরও। আমার বড়পিসি অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ মানুষ ছিলেন। রোজ দীর্ঘ সময় কাটাতেন তাঁর ঠাকুর ঘরে। তাঁর বাড়ির পাশেই মুসলিম পাড়া। মসজিদও খুব কাছে। মুসলিম প্রতিবেশীদের সঙ্গে গভীর সুসম্পর্ক ছিল পিসির। তাঁর বাড়িতে প্রতিবেশীদের অবাধ যাতায়াতও ছিল। পিসির বিপদের সঙ্গী ছিলেন তাঁরা। আবার পড়শিরাও পিসিকে অভিভাবক মানতেন। আরও অনেক কিছুর সঙ্গে পিসির সেই জীবনযাপন শিখিয়েছে ধার্মিক আর সাম্প্রদায়িক মানুষের ফারাক চিনতে।   

বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যে যা চলছে, তাতে মনের ভেতর অবিরাম রক্তপাত ঘটে যাচ্ছে। সেই যন্ত্রণা থেকেই লিখছি। 

জাতীয় সড়ক অবরোধ
বৃহস্পতিবার থেকে কী হয়েছে, সেটা সবারই জানা। 

কোনও ধর্মের স্রষ্টাদের মধ্যে হজরত মহম্মদের গায়ে যত কালি ছেটানো হয়েছে, কুৎসা করা হয়েছে, খারাপ কথা বলা হয়েছে, অপমান করা হয়েছে, সেটা অন্য আর কারও ক্ষেত্রে হয়নি। তাতে কি মহম্মদের সম্মান কমেছে? তাঁর প্রভাব কমানো গেছে? তাহলে পৃথিবীতে মুসলিম প্রধান ৫৭টি দেশ থাকতে পারত? তাহলে ইসলাম পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম হয়ে উঠতে পারত (ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষের সংখ্যা প্রায় ২০০ কোটি)? হজরত মহম্মদের সম্মান এত ঠুনকো নয় যে দু'-একটা খুচরো লোকের মন্তব্য বা টুইটে তা ভেঙে খানখান হয়ে যাবে।

কোরআনে তো বলা হয়েছে, ভাল মানবিক গুণাবলীর অন্যতম হল, ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা। মহম্মদ নিজেকে ধৈর্যশীল ও পরম সহিষ্ণু হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়েছেন। 

মহম্মদের সম্মান রক্ষার নামে যে হিংসা-উন্মত্ততা হল সেটা কী ভাবে ইসলাম সম্মত হল? ১১ ঘণ্টা জাতীয় সড়ক আটকে হাজার হাজার লোককে বিপাকে ফেলে, অ্যাম্বুল্যান্স আটকে, পুলিশের গাড়ি বা বিজেপি অফিস জ্বালিয়ে দিলে মহম্মদের সম্মান বাড়ে বুঝি? কোরআন বা হাদিসের কোথাও কি সেই রাস্তার কথা বলা আছে? কোরআন তো বলে, মানুষ আসলে আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি। ইসলামের নামে গুন্ডামি করে সেই সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেললে মহম্মদের সম্মান বাড়ে? কী বলা হবে, মহম্মদের অনুগামীরা গুন্ডামি করেছে। তাতেই তো মহম্মদের অপমান। 

ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের একাংশকে যারা সেই রাস্তায় নিয়ে গেল, তাদের ধর্ম যাই হোক না কেন, আসলে তারা কাফের। যারা নিজেদের রাজনৈতিক-আর্থিক লাভক্ষতির জন্য মহম্মদকেও ব্যবহার করতে পারেন, তাদের মুসলমান বলা যায়? পর্দার আড়ালে থাকা ওই লোকগুলোই নানা অজুহাতে তারা গরীব, শিক্ষাহীন, বেকার কম বয়সীদের খেপিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করে।   

বছরের পর বছর এটা চলে আসছে। রাজনীতির লোকেরা পর্দার আড়ালে থাকা ওই লোকগুলোকে মদত দিয়ে ভোটে ফয়দা তোলেন, ক্ষমতার মসনদে বসেন। 

অবরোধ

নূপুর শর্মা মন্তব্য করেছিলেন ২৭ মে। নবীন জিন্দালের টুইট ১ জুন। তার এক সপ্তাহেরও পর হঠাৎ বৃহস্পতিবার হাওড়ায় অশান্ত শুরু হল। শুক্রবার দেশের ১৪টি রাজ্যে নব্বইয়ের বেশি জায়গায় প্রায় একই সময়ে বিক্ষোভ। অদ্ভুত না? তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ভাঙচুর হলে তা-ও মানে বোঝা যায়। কিন্তু এ তো পরিকল্পনা করে। যে ছেলেটা পুলিশের দিকে ইট ঢুড়ল বা জাতীয় সড়ক আটকে বসে থাকল কিংবা পুলিশের জিপে আগুন দিল অথবা পুলিশ যাকে ধরল, পর্দার আড়ালের পরিকল্পনার প-ও সে জানে না। না জেনেই সে হয়ে গেল সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বোড়ে। 

আমাদের অবস্থাটা দেখুন। গরিবি বাড়ছে। বেকারি বাড়ছে। ধনকুবেরদের সম্পত্তি বাড়ছে। জিনিসপত্রের দামে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। পেট্রোল-ডিজেল-রান্নার গ্যাসের দাম কোথায় উঠে গেছে!

আর আমাদের ব্যস্ত রাখা হচ্ছে ধর্মীয় বিদ্বেষ, ঘৃণার রাজনীতিতে, হিংসার রাজনীতিতে।

বিজেপি স্রেফ সরকার গড়ার লক্ষ্য নিয়ে চলা একটা পার্টি নয়, এটা বুঝতে বারবার ভুল হয়েছে। জন্মের সময় থেকেই আরএসএস এদেশকে হিন্দুরাষ্ট্র বানানোর কথা ঘোষণা করেছে। বিজেপি তার রাজনৈতিক দল (আরএসএসের একমাত্র রাজনৈতিক দল, লোক ঠকাতে অনেকে ইদানিং বলছেন, আরএসএসের নাকি দুটো পার্টি, বিজেপি আর তৃণমূল)। 

অনেকে ভাবতেন রাম মন্দির কখনও তৈরি করা হবে না। ভোট পাওয়ার জন্য গাজরের মতো বছরের পর বছর সেটা ঝুলিয়ে রাখবে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে পরপর দুবার বিজেপি একার জোরেই কেন্দ্রে সরকার গড়ার সংখ্যা জোগাড়ের পর রাম মন্দির তৈরি হচ্ছে, কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়া হয়েছে, ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। আরএসএস জানে হিন্দুরাষ্ট্রের লক্ষ্যপূরণে এগোতে গেলে সরকারের ক্ষমতা হাতে রাখতে হবে। ২০২৪ সালে লোকসভা ভোট। ছক অনুযায়ী কাজ শুরু হয়ে গেছে অনেক আগেই। শুধু প্রয়োজনীয় সংখ্যা জোগাড় করাই নয়, আদর্শগত ও রাজনৈতিক ভাবনায় ছাওয়া পরিবেশও তো তৈরি করতে হবে।   

নরেন্দ্র মোদি
খেয়াল করুন, নতুন করে কাশ্মীর উপত্যকায় পণ্ডিত খুন শুরু হয় ৫ অক্টোবর, ২০২১। 'কাশ্মীর ফাইলস' ছবিটি মুক্তি পায় ১১ মার্চ, ২০২২ (শুটিং শেষ হয়েছে ১৪ মাস আগে)। অসংখ্য মিথ্যে ও বিকৃত তথ্যে ভরা (প্রয়োজনে বিস্তারিত অন্য লেখায়) সেই সিনেমা দেখতে বললেন প্রধানমন্ত্রী। এরকম কাণ্ড আগে কখনও হয়েছে বলে জানা নেই। জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভা কেন্দ্রগুলির পুনর্বিন্যাস করে বিজেপির সরকার গড়ার ছক কষা শুরু করেছে।  

গরুর মাংস নিয়ে গোলমাল আগে থেকেই ছিল। কর্নাটকে হিজাব, কাশীর জ্ঞানবাপী মসজিদ, মথুরার ঈদগাহ, দিল্লির কুতুব মিনার, আগ্রার তাজমহল সহ একাধিক বিষয় নিয়ে বিতর্ক বাধানো হচ্ছে। কোনওটাই বিচ্ছিন্ন নয়, অত্যন্ত পরিকল্পিত। 

মুসলিমদের খাদ্য, বস্ত্র, প্রার্থনার জায়গা ইত্যাদি নিয়ে পরপর আক্রমণ করে তাঁদের মানসিক ভাবে বিপন্ন করো। দিনের পর দিন কোনঠাসা হতে থাকলে মুসলিম সমাজের কিছু মানুষকে দ্রুত হিংস্র করে তোলা যাবে। তাকে কাজে লাগিয়ে হিন্দুরাষ্ট্রের রথ আরেকটু এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে। এমন পরিবেশ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে যাতে মুসলিমদের হয় দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে নয়তো দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে থাকতে হবে।     

বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মার মন্তব্য বা নবীন জিন্দালের টুইটও সেই পরিকল্পনার বাইরে নয়। কিন্তু তা নিয়ে একের পর এক ইসলামিক দেশ আপত্তি জানাতে শুরু করায় পরিস্থিতি ঘোরাল হয়ে যায়। ভারত সরকার জানায়, নূপুর ও নবীনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাস্তবে তাঁদের শুধু বিজেপি পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে (অতীতে এরকম অনেক মন্তব্য ও বহিষ্কারের হাস্যকর পরিণতির নজির একটু খুঁজলেই পাওয়া যাবে)। সরকার কিন্তু কোনও আইনী পদক্ষেপ করেনি। ওমানের ভারতীয় দূতাবাস সরকারের বিবৃতি হিসেবে বিজেপির প্যাডে ছাপানো বক্তব্যই মিডিয়ার কাছে পাঠিয়ে দেয়। খেয়াল করুন, প্রধানমন্ত্রী কিংবা সরকারের কোনও শীর্ষ নেতাই কিন্তু মুখ খোলেননি। দুঃখপ্রকাশও করেননি। 

আন্তর্জাতিক স্তরে বেজায় চাপের মুখে নরেন্দ্র মোদী সরকার। আবার নূপুরদের বহিষ্কার করায় বিজেপির ভেতরেও কট্টরপন্থীদের চাপ। চাপ সরাতে সবচেয়ে ভাল ওষুধটাই কাজে লাগানো হল। মুসলিম মৌলবাদীদের মাঠে নামানো হল।  

খেয়াল করুন কী কী হল তারপর। 

প্রতিবাদ
পাকিস্তানে হিন্দু মন্দির ভাঙ্গা হল। পুরোহিতকে মারধর করা হল। 

তারপর ৯ জুন হাওড়ায় ১১ ঘণ্টা জাতীয় সড়ক অবরোধ। ১০ জুন দেশের ১৪ রাজ্যের নব্বইয়ের বেশি জায়গায় পরিকল্পিত বিক্ষোভ। 

আমাদের রাজ্যের জনসংখ্যার ৩০% মুসলিম। বছরের পর বছর একের পর এক পার্টির নিরাপদ ভোটব্যাঙ্ক। 

মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি তো একবার স্পষ্টই বলে দিয়েছেন, 'হ্যাঁ, আমি মুসলিম তোষণ করি। যে গরু দুধ দেয় তার লাথিও খেতে হয়।'   

সকাল থেকে অবরোধে আটকে বোম্বে রোড। পাড়ার গলি রাস্তা নয়, জাতীয় সড়ক অবরোধ। ঘণ্টা ছয়েক পরে মুসলিম মেয়র-মন্ত্রীকে পাশে বসিয়ে মুখ্যমন্ত্রী (mamata banerjee) বললেন, নবান্নের চোদ্দ তলায় নিজের ঘরে বসে দেখেছেন কী ভাবে সার সার গাড়ি ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে আছে। অবরোধ তুলে নিতে হাত জোড় করে অনুরোধ করলেন। তারপরও অবরোধ উঠল না। চলল আরও ঘণ্টা তিনেক। 

অনেকে ভেবেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী বুঝি নিজেই অবরোধ তুলতে চলে যাবেন, যেমন সেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে গিয়েছিলেন! তিনি তো নিজেকে 'রাফ অ্যান্ড টাফ' বলেন। তাঁর বেজায় সাহসের বিজ্ঞাপনও করেন! কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তাঁর আঁকা ছবি নিয়ে চলে গেলেন রাজভবনে। খবর পেয়ে শহিদ মিনারে বিক্ষোভে বসে থাকা ২০ জন এসএসসি চাকরিপ্রার্থী মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে পুলিশ তাঁদের টেনেহিঁচড়ে সরিয়ে দেয়। 

মিডিয়া বলতে শুরু করল, 'মুখ্যমন্ত্রী অবরোধকারীদের কড়া বার্তা' দিয়েছেন। সেই কড়া বার্তায় কী কী হল, তার বিবরণ দিয়ে লেখা বড় করতে চাইছি না।  

সোজা কথা সোজা করেই বলছি, হাত জোর করে বা টুইটে অনুরোধ, মুখ্যমন্ত্রীর লোক দেখানো কাজ। সত্যি তিনি চাইলে বোম্বে রোডের অবরোধ তুলে দিতে পারতেন। পরের দিনগুলোর অশান্তি লাগতে দিতেন না। পুলিশ না পারলে সেনা বা আধা সেনা ডাকতে পারতেন। কিন্তু সরকার পুলিশকেও কার্যত বসিয়ে রাখল। যারা হামলার আসল কারিগর, তারাই যে ভোট জোগাড় করে দেয়। তাদের চটালে চলে? তাই হামলাবাজি চলতে দেওয়া হল। তারপর লোক দেখাতে হাওড়ার সিপি আর হাওড়া গ্রামীণের এসপি বদল হল, ভাবটা এমন যে তাঁরা পরিস্থিতি সামলাতে পারেননি। (CP, SP changed in Howrah)

মমতা ব্যানার্জি
শুধু মুখ্যমন্ত্রীর কথাই বা বলি কেন?   

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি লোকসভায় কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেতা। তাঁর জেলা মুর্শিদাবাদেও অশান্তি ছড়িয়েছে। তিনি স্পিকটি নট।  

'প্রথম মুসলিম রাজ্য সম্পাদক' ও তাঁর পার্টিও বিলকুল চুপ। তাঁদের দলের মুখপত্র পড়লে বোঝাই যাবে না, বৃহস্পতিবার ১১ ঘণ্টা জাতীয় সড়ক আটকে ছিল। ওঁরা বোধহয় বিজেমূল ধরতে নাগপুরের দিকে দূরবীন তাক করে বসে আছেন। 

তাঁর প্রিয় 'ভাইজান'? দু'দিনে একটা বিবৃতি আর শনিবার ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরে আমডাঙায় জলসা করে শান্তির আবেদন জানানো।  

ফয়দা তুলতে নেমে গেছেন বিজেপি নেতারা। পুরো ঘটনায় তাঁদের যে রাজনৈতিক লাভের ষোল আনা সম্ভাবনা, সেটা বুঝতে বিশেষ কষ্ট করতে হয় না। বিরোধী দলনেতা হিন্দুদের এক হওয়ার ডাক দিয়ে দিয়েছন। রাজ্য সরকার বিজেপির ঘরের গোলমালকে কাজে লাগাতে পুলিশ ব্যবহার করে আরও হাসির খোরাক হচ্ছে।    

সিএএ আন্দোলনের (anti CAA movement) সময়ও দেখেছি, মুর্শিদাবাদে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন জায়গায় লুঠপাট, আগুন, ভাঙচুর, অশান্তি ছড়ায়। কিন্তু পার্ক সার্কাসেও তো সিএএ বিরোধী অবস্থান চলেছে দিনের পর দিন। দিল্লির শাহিনবাগের টানা অবস্থান তো সারা দুনিয়ার নজর কেড়েছে। তাঁরা তো একদম শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেই সিএএ আটকে দিতে পেরেছেন। 

তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কৃষকরা দিল্লিতে ঢুকতে চেয়েছিলেন। সরকার ওঁদের আটকাতে কংক্রিটের পাঁচিল তুলে দিয়েছে, রাস্তায় কাচ-পেরেক পুঁতে দিয়েছে। ওঁরা সেখানেই বসে পড়েছেন। বছরখানেক রাস্তাতেই বসে থেকেছেন। কিন্তু আইন কখনও হাতে তুলে নেননি। অনেক ছক কষেও সরকার পাঁচশোর বেশি সংগঠনের যৌথ আন্দোলন ভাঙতে পারেনি। শেষমেষ সদস্য পাশ হওয়া তিনটে আইন বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। 

সিঙ্গুরে মমতা ব্যানার্জির অবস্থানের সময় জাতীয় সড়ক আটকে যায়। ব্যবস্থা নেয়নি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার। এবার জাতীয় সড়ক আটকে ছিল ১১ ঘণ্টা। মমতা ব্যানার্জি নিষ্ক্রিয় ছিলেন। সরকার যদি মানুষের অধিকার রক্ষা করতে না পারে, তবে মানুষ কেন তার উপর ভরসা করবে? বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে সরে যেতে হয়েছে। মমতা ব্যানার্জিরও তাই হবে।

নানা দাবিতে অবরোধ হলে পুলিশ তুলে দেয়। সেটাই তো উচিত। কিন্তু বোম্বে রোড খোলার ব্যবস্থা হল না। একেক জনের জন্য তো একেক রকম আইন হতে পারে না। কিন্তু সেটাই করা হয় ভোটের লাভ তুলতে। তাতে আখেরে ক্ষতি হয় মুসলিম সমাজেরই। তারা দয়ার পাত্র হয়ে যান ক্রমশ।       

বছরের পর বছর এ রাজ্যে মুসলিমরা স্রেফ ভোটব্যাঙ্ক। কংগ্রেস-বাম-এখন তৃণমূল, বিভিন্ন সময় তাদের বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণের অভিযোগ ওঠে। সত্যি তা হলে তো মুসলিমদের ভাল হওয়ার কথা। কিন্তু রাজ্যের মুসলিম সমাজের ভয়াবহ ছবিটা ধরা পড়েছিল বাম জমানায় প্রকাশিত সাচার কমিটির (Sachar committee) রিপোর্টে। এখন ছবিটা আরও খারাপ হয়েছে। অর্থাৎ মুসলিমদের গায়ে সুবিধাভোগীর স্ট্যাম্প পড়ছে অথচ তাদের উন্নতি হচ্ছে না। 

মমতা ব্যানার্জি
মমতা মুসলিম সমাজের রক্ষাকর্তা, এরকম একটা ভাবমূর্তি তৈরি করা হয়েছে। মুসলিমদের প্রতি নূন্যতম শ্রদ্ধা, ভালবাসা থাকলে কেউ একথা বলতে পারেন, 'আমি মুসলিমদের তোষণ করি। যে গরু দুধ দেয় তার লাথি খেতে হয়।' এ তো সরাসরি মুসলিমদের অপমান করা। 

মমতার কাছে মুসলিমরা শুধুই 'দুধেল গরু', মানে ভোটব্যাঙ্ক। তাঁর সোজা অঙ্ক। ভোট জোটানো মুসলিম ধর্মীয় নেতাদের গুন্ডামি করতে দাও। তাতে বিজেপি জাগবে। তখন বিজেপি জুজু দেখিয়ে মুসলিম ভোট পকেটে ভরা যাবে। প্রায় ৩০% মুসলিম ভোট মুঠোয় থাকলে গদিও মুঠোয় থাকবে। 

সরকারি দলের প্রশ্রয়ের আড়ালে কীভাবে সন্ত্রাসবাদী জঙ্গিরা এ রাজ্যে বাসা গাড়ে, খাগড়াগড় তো সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে। শাসক দলের এক সংসদের নামও জড়িয়েছে তাতে। কালি লেগেছে কাদের গায়ে? মুসলমান সমাজের গায়ে।  

...সবসে প্যায়ারা হ্যায়
আমার আত্মীয় বন্ধু প্রতিবেশী সহপাঠী সহকর্মীদের অনেকেই মুসলমান। রাজনীতি করেছি দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলায় যেখানে জনসংখ্যার প্রায় ৩৬ শতাংশ মুসলিম। সে সব অভিজ্ঞতা থেকে আমার মনে হয়েছে, মুসলিমরা সাধারণ ভাবে অন্য যে কোনও সম্প্রদায়ের মানুষের মতোই শান্তিপ্রিয়, বন্ধুবৎসল। তবে ধর্মবিশ্বাসে খানিকটা গোঁড়া। সম্ভ্রান্ত, শিক্ষিত মুসলিমরা গরীব মুসলিমদের থেকে চোখে পড়ার মতো দূরত্ব রক্ষা করেন।

ভোটের রাজনীতির নানা অঙ্কে বছরের পর বছর তাঁরা অসম্মানিত হচ্ছেন। মুসলিমদেরই তো সেটা মুখ ফুটে বলতে হবে। 'মুখ সামলে কথা বলবেন, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। আমরা মানুষ, আমরা দুধেল গরু মানে ভোটব্যাঙ্ক নই', বলবেন না? তাঁদের তো বলতে হবে, 'মুসলিমদের বাঁচানোর নামে যারা তাণ্ডব চালাচ্ছে তারা মুসলমান সমাজের কলঙ্ক। ওরা হজরত মহম্মদের অপমান করছে। ওরা আমাদের কম বয়সীদের ক্রিমিনাল বানিয়ে দিচ্ছে। ওদের জন্যই মুসলিম সম্প্রদায়ের গায়ে জঙ্গি, অপরাধী ছাপ লাগানো সহজ হচ্ছে। ওরা হিন্দু মৌলবাদীদের সাহায্য করতেই এসব করছে।' 

নিরাপদ থাকার চেষ্টায় নীরব থাকলে অসম্মানের জোয়াল বয়ে নিয়ে যেতে হবে বছরের পর বছর। অনুন্নয়নের নীচে চাপা পড়ে থাকতে হবে যুগের পর যুগ। সে আপনি সম্ভ্রান্ত হোন বা গরীব, শিক্ষিত হোন বা নিরক্ষর।

নরেন্দ্র মোদী
ভারতকে 'হিন্দু পাকিস্তান' বানানোর চেষ্টা চলছে। তাই অবাধে চলছে ইতিহাস বিকৃতি, ঘৃণা আর বিদ্বেষের রাজনীতি। 

শনিবার থেকে কানপুরে বুলডোজার দিয়ে 'দাঙ্গাকারীদের' বাড়ি ভাঙা শুরু করেছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। টুইটে সেই ছবি দিয়ে যোগীর মিডিয়া উপদেষ্টা লিখেছেন, 'মনে রাখবেন প্রত্যেক শুক্রবারের পরই একটি শনিবার আসে।' হুমকিটা কাদের প্রতি সেটা স্পষ্ট। প্রয়াগরাজে বেছে বেছে সিএএ বিরোধী আন্দোলনের নেতাদের টার্গেট করা হচ্ছে। (Bulldozer politics in Yogi's UP)

অঙ্কটা এরকম, এখানে মুসলিমদের খাওয়া-পোশাক-উপাসনার জায়গা ইত্যাদি নিয়ে পেছনে লাগো, মুসলিমদের হাওয়া দিয়ে অশান্তি বাধাও, পাকিস্তান বা বাংলাদেশে কোনও মন্দির ভাঙো, সেটা দেখিয়ে হিন্দুদের খেপাও...। মুসলিমদের ক্রমশ কোনঠাসা করো, যাতে তারা আরও হিংস্র হয়ে ওঠে। তা দেখিয়ে এদেশে রাজনৈতিক হিন্দুত্বের জমি তৈরি করো আর অন্য দেশে রাজনৈতিক ইসলামের পালে হাওয়া লাগাও। 

গত বছর দুর্গা পুজোর সময় বাংলাদেশে কী হয়েছিল? কয়েকজন মুসলিম যুবক গভীর রাতে কুমিল্লার দুর্গা পুজো মণ্ডপে হনুমান মূর্তির পায়ের ওপর কোরআন রেখে আসে। তারপর কোরআনের অপমান বলে প্রায় একই সময়ে কুমিল্লার বেশ কয়েক জায়গায় একসঙ্গে হামলা শুরু করে। আরও কয়েক জায়গায় অশান্তি ছড়ায়। খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেয় শেখ হাসিনা সরকার। নাহলে ওই আগুন বাংলাদেশের মতো এ রাজ্যে, এ দেশেও ছড়াত। যেমন ত্রিপুরায় চেষ্টা করেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। যেমন এবার এদেশের ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে বাংলাদেশেও।

বাংলাদেশে মুসলিমরা সংখ্যায় বেশি, আমাদের এখানে হিন্দুরা। কারও পায়ের ওপর কোরআন রাখার কথা কোনও ধর্মপ্রাণ মুসলিম ভাবতে পারবেন না। মন্দিরে গরুর মাংস ফেলে আসার কথা কোনও ধর্মপ্রাণ হিন্দু ভাবতে পারবেন না। ওরা পারে। কারণ ওরা ধার্মিক নয়, ওরা হিন্দু বা মুসলমান নয়, ওরা গুন্ডা, ওরা সাম্প্রদায়িক। ওরা রাজনৈতিক-আর্থিক লাভের জন্য যা খুশি তাই করতে পারে ওরা। 

হিন্দু আর মুসলিম সাম্প্রদায়িক শক্তি হাতে হাত মিলিয়ে চলে। তাদের আটকাতে হিন্দু আর মুসলিম শান্তিপ্রিয় মানুষকেও হাতে হাত রেখে চলতে হবে। এছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই। ওরা হাত ধরে পর্দার আড়ালে। আমাদের হাত ধরতে হবে প্রকাশ্যে।

ভোটের রাজনীতির অঙ্ক কষতে গিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতার (ঠিকঠাক শব্দটা হল secularism) আদর্শের বারোটা বাজানো হয়েছে আগেই। তাতে হিন্দু-মুসলিম-শিখ-বৌদ্ধ, কোনও সম্প্রদায়েরই লাভ হয়নি। লাভ হয়েছে মৌলবাদের। বাবরি মসজিদ ভাঙার পরেও আমরা আয়নায় মুখ দেখিনি। এখন তাই চলছে ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্র বানানোর পালা। 

স্বামী বিবেকানন্দ
রাজনৈতিক হিন্দুত্ববাদীরা প্রচার করে, 'স্বামী বিবেকানন্দ (Swami Vivekanand) বলেছিলেন গর্ব করে বলো আমি হিন্দু'। কোথাও বিবেকানন্দের এই কথা খুঁজে পাবেন না। নিজেদের মত প্রতিষ্ঠায় যারা প্রতি পদে মিথ্যার আশ্রয় নেয় তারা ধার্মিক হতে পারে না। ধর্ম মানে তো সত্য।   

সত্যটা কী? কী বলেছিলেন বিবেকানন্দ? 

'আমি সাহস করে বলছি, সমগ্র সংস্কৃত দর্শন শাস্ত্রের মধ্যে এরকম মনোভাব কেউ দেখাতে পারবে না যে, একমাত্র হিন্দুই মুক্তির অধিকারী, আর কেউ নয়।...যে ধর্ম দুনিয়াকে চিরকাল পরমত সহিষ্ণুতা ও সব রকম মত স্বীকার করার শিক্ষা দিয়ে এসেছে, আমি সেই ধর্মের বলে গর্বিত। আমরা শুধু সব ধর্মকে সহ্য করি, তাই না, সব ধর্মকেই স্বীকার করি।...প্রত্যেক ধর্মেই ঈশ্বর আছেন। সব ধর্মের সার কথাটিই হল সত্য। ধর্ম হল মানুষকে পশু থেকে মানুষে এবং তারপর মানুষ থেকে দেবতায় রূপান্তরিত করা।...আমরা মানব সমাজকে সেই জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, যেখানে বেদ-বাইবেল-কোরআন নেই, অথচ বেদ-বাইবেল-কোরআনের সমন্বয়েই তা করতে হবে। মানুষক শেখাতে হবে সব ধর্ম ‘একত্বরূপ সেই এক ধর্মে’-রই বিবিধ প্রকাশ মাত্র, যার যেটা সবচেয়ে উপযোগী মনে হবে তিনি সেটিকেই বেছে নিতে পারেন।' ‘ঐসলামিক পেশি এবং হিন্দু মস্তিষ্ক’-এর সমন্বয়ে শক্তিমান ভারত গড়ার কথা ভেবেছিলেন বিবেকানন্দ। ‌‌

বিবেকানন্দের সেই ভারত প্রতিষ্ঠিত হলে মোহন ভাগবত, নরেন্দ্র মোদীদের তো ছুটে পালাতে হবে মঙ্গল গ্রহে। পালাতে হবে মৌলবাদী মোল্লাদেরও।

তাই রোজ শয়ে শয়ে মিথ্যা-অর্ধসত্য-বিকৃত তথ্য-ঘটনা পরিকল্পিত, সংগঠিত ভাবে প্রচার করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য হিন্দু আর মুসলমানকে শত্রু হিসেবে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া। 

ভারত মানে বিবিধের মানে মিলন
অন্যের উস্কানিতে, অন্যের সুবিধার জন্য অনেক তো খেলা হল, এবার খেলা হোক নতুন মাঠে, নিজেদের অন্ন-বস্ত্র-শিক্ষা-স্বাস্থ্য-বাসস্থান-নিরাপত্তা-কথা বলার অধিকার অর্জনের খেলা।

সেটাই তো যে কোনও মানুষের সেরা ধর্ম। সব ধর্মের মূল কথাই তো সেটা। সত্যি সত্যি ধর্মকে প্রতিষ্ঠা করতেই মৌলবাদী অধার্মিকদের হারাতে হবে, তাড়াতে হবে।  

হাত জোড় করে অনুরোধ করব, বিদ্বেষ ছড়ানোর অনেক উপাদান পেয়ে যাবেন হাতের কাছে। সে সবকে পাশে সরিয়ে রেখে নিজেদের জীবনটাকে সুন্দর করার চেষ্টাটা করা যাক। মসজিদ ভেঙে মন্দির হোক বা না হোক, তাতে কারও শিক্ষা-কাজ-গরিবি দূর করার ব্যবস্থা হবে না। অতীতে অনেক কিছু হয়েছে। অনেক হিন্দু মন্দির ভেঙে মসজিদ হয়েছে। অনেক বৌদ্ধ মন্দির ভেঙে হিন্দু মন্দির হয়েছে। সেটা সংশোধনের নামে কি পিছনের দিকে হাঁটা যায়? মিনিবাসের কন্ডাক্টরের মতো কি আমরা বলব, দাদা পিছন দিকে এগিয়ে যান? নাকি রবীন্দ্রনাথের ভাষায় বলব, আমরা চলি সমুখপানে কে আমাদের বাঁধবে, রইল যারা পিছুর টানে কাঁদবে তারা কাঁদবে।


চলছে কেমন গড়গড়িয়ে...পর্ব-১

https://jachchetaii.blogspot.com/2022/06/agnipath-bulldozer.html

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

6 মন্তব্যসমূহ
নামহীন বলেছেন…
এই বিষয়ে প্রথম একটা প্রকৃত সময়োপযোগী ও নিরপেক্ষ লেখা পড়লাম। এক্কেবারে আমার মনের কথা। মুশকিল হচ্ছে এই -কাকে আর কাদের এই লেখাটা পড়াবো?এই সূচতুর রাজনৈতিক অভিসন্ধির দাবা খেলায় আমার পাশের অনেকেই যে বোরে হয়ে দিয়েছে- ভারত আর বাংলাদেশে!
Uttal Ghosh বলেছেন…
হতাশ হলে তো চলবে না। চেষ্টা চালাতেই হবে। আমার চারপাশে ও তো।এরকম মানুষ আছেন। তাদের দূরে সরালে চলে না
নামহীন বলেছেন…
যুক্তিপূর্ণ, পরিষ্কার কথা ।
Keya Ghosh বলেছেন…
নানা ভাষা নানা মত নানা পরিধান এর দেশে কাজটা খুব সহজ নয়.... কেউ আর দেশের মানুষের কথা ভাবেনা। শুধু ভোটার সত্য।এক ও অদ্বিতীয়।
নামহীন বলেছেন…
সময়োচিত ও প্রাসঙ্গিক। তবে, ভারতের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিয়ে লেখা গান্ধীজিকে বাদ দিয়ে অসম্পূর্ণ বলে আমার ব্যক্তিগত ধারণা। জিন্নাকে সাম্প্রদায়িক বলাটা আমার আপত্তি আছে উত্তালদা আগেও বলেছি। জিন্নার ধর্মের ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠনের কনসেপ্টে, ধর্মীয় বিভাজন নয়, বরং cultural difference-কে গুরুত্ব দিয়েছিল। সাভারকরের হিন্দুরাষ্ট্রের ভাবনাও শুরুতে খানিকটা অনুরূপ ছিল। গান্ধীজি নিজের ও কংগ্রেসের স্বার্থ না দেখলে, আজ অন্যরকম ভারত-পাকিস্তান দেখতাম হয়তো আমরা। জিন্নাকেও ভিলেন মনে হতো না হয়তো। Debmalya, Kolkata
Keya Ghosh বলেছেন…
হতাশার যথেষ্ট কারণ আছে। চারপাশে তো ভোটার আর সংখ্যা দেখতে পাই আজকাল। শূন্য ও একটা সংখ্যা বিশেষ

Top Post Ad