link text

Breaking Posts

6/trending/recent

Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

৩৪০০ চাকরি, আবেদন ১৭ লক্ষ #Economic-development-and-employment

পদের নাম: পঞ্চায়েত সচিব
শূন্যপদ: ৩৪০০
আবেদনকারী: ১৭ লক্ষ

পদের নাম: হেডক্লার্ক
শূন্যপদ: ১৮৬
আবেদনকারী: ২ লক্ষ

২২টি থানায় ৬০০ গ্রামরক্ষক (দৈনিক বেতন ২৩০ টাকা) পদের জন্য আবেদন করেন ১০ হাজারের বেশি।

২০১৪-২১, এই ৭ বছরে ৯টি বড় সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। পরীক্ষার আগের দিন বিভিন্ন জায়গায় একেকটি প্রশ্নপত্র বিক্রি হয়েছে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকায়।

মার্চ-২০২১, এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে নথিভূক্ত ৪,০৬,০০৭ জন। তাঁদের মধ্যে শিক্ষিত ৩,৮৫,৫০৬ এবং ২০,৫০১ জন অর্ধশিক্ষিত। 

দু বছরে ০.৩৫% বেকারকে চাকরি দিয়েছে সরকার। ১৬ জেলায় সংখ্যাা ০। 

২০১৯ ও ২০২০, এই দুই বছরে সরকারি চাকরি পেয়েছেন ১৭৭৭ জন।

১০০ দিনের প্রকল্পে জব কার্ড আছে ৩০ লক্ষ। তার মধ্যে সক্রিয় ১৫ লক্ষ।

ছবিটা গুজরাটের। ১৯৯৮ সাল থেকে টানা ২৩ বছর বিজেপির দখলে থাকা গুজরাট। মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় যে মডেল চালু করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী, এ হল তার ফলাফল।
নীতি আয়োগের রিপোর্ট বলছে, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে প্রচুর বিনিয়োগে সমৃদ্ধ আদানি-আম্বানি-টাটাদের গুজরাটে বেকারত্বের হার ছিল ৩.৪% আর বামফ্রন্ট জমানার ‘জঙ্গি ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন’ এবং তৃণমূল জমানার ‘অপদার্থতা’-র ধাক্কায় ‘খুব গরিব’ হয়ে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গে ৪.১ শতাংশ। CMIE রিপোর্ট বলছে, সেপ্টেম্বর-২০২২ গুজরাটে বেকারত্বের হার ১.১% আর পশ্চিমবঙ্গে ৩.৩%। অর্থাৎ যে রাজ্যে বিকাশের ঝড় বইছে, সেখানেও শিক্ষিত বেকারের লম্বা লাইন রোজ আরও লম্বা হচ্ছে।
চাকরির লাইনে গুজরাট
তার মানে গুজরাটে অর্থনৈতিক বিকাশ হচ্ছে না, সেটা একবারও বলছি না। কিন্তু এই উন্নয়ন কার পক্ষে লাভের হচ্ছে? কিসের বিনিময়েই বা হচ্ছে এই উন্নয়ন? গুজরাটে সরকার শিল্পের জন্য বিপুল পরিমাণ জমি (কৃষিজমি সহ) অধিগ্রহণ করেছে। ১৯৯০-২০০১ সরকার জমি অধিগ্রহণ করেছিল ৪৬২০ হেক্টর। ২০০১-১১ সময়কালে সেটা বেড়ে হয় ২১,৩০৮ হেক্টর। বাজার দরের চেয়ে কম দামে জমি দেওয়া হয় শিল্পপতিদের। 
শিল্পের জন্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের অনুমতি দরকার নেই। চাষের জমিকে শিল্পের জন্য জমিতে বদলের পদ্ধতি সরল করা হয়। ২০০৪ সালে শ্রম আইনও শিথিল করা হয়। এর সঙ্গে শিল্প গড়তে সহজ শর্তে ঋণ, ভর্তুকি, সেলস ট্যাক্স মকুব সহ বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়। এজন্য সরকারের খরচ ১৯৯০-৯১ থেকে ’৯৯-২০০০ পর্যন্ত ছিল প্রতি বছর ১২৫৩.৫৬ কোটি টাকা। মোদী মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় ২০০০-০১ থেকে ২০০৬-০৭ পর্যন্ত সেটা বেড়ে হয় বছরে ৫,৯৬৬.৭২ কোটি টাকা। টাটা ন্যানো প্রকল্পে ৩০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে সরকার। (পড়ুন) (পডুন)
কিছু কোম্পানির কাছ থেকে কোনও করই নেওয়া হয় না। আদানি, আম্বানি, এসার-সহ বিভিন্ন সংস্থার বিরাট বিরাট বিনিয়োগ হয়েছে। কিন্তু সে অনুযায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়নি। 
সানন্দে ন্যানো কারখানা
উদাহরণ হিসেবে টাটাদের ন্যানো প্রকল্পের কথাই ধরা যাক। এই প্রকল্পে ২৯০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে কর্মসংস্থান হয়েছে ২,২০০ জনের (১.৩ কোটি টাকা বিনিয়োগে একটি কাজ)। তাঁদের মধ্যে ৪৩০ জন স্থায়ী কর্মী (permanent workers)। ২০১৬ সালে তাঁদের গড় বেতন ছিল মাসে সাড়ে ১২ হাজার টাকা। বাকি অস্থায়ী কর্মীদের আয় ছিল মাসে গড়ে ৩,৩০০ টাকা। অত্যন্ত কম মজুরিতে শ্রমিক পাওয়া যায় গুজরাটে। NSS রিপোর্ট অনুযায়ী কম মজুরির দিকে থেকে ভারতের সব রাজ্যের মধ্যে নিচের দিক থেকে তৃতীয় হল গুজরাট। সেখানে ২০১৬ সালে কৃষিক্ষেত্রে দৈনিক মজুরি ছিল ২৬৪ টাকা। এখন হয়েছে ৭৭ টাকা।
বড় বড় বিনিয়োগ গুজরাটের শিল্পোন্নয়নের ছবিটাকে বেশ রংচঙে করেছে। ২০১৪-২২ দেশের মোট বিনিয়োগের ৫৭% হয়েছে গুজরাটে। ২০১৩ সালে দেশের স্থির মূলধনের ১৭.৭% ছিল বড় বড় বিনিয়োগ টানা গুজরাটের আর ছোট ও মাঝারি শিল্প কেন্দ্রীক তামিলনাড়ুর ছিল ৯.৮%। কিন্তু শিল্পক্ষেত্রে কর্মসংস্থান গুজরাটে ছিল ৯.৯%, তামিলনাড়ুতে ১৬%।
অনেকে অভিযোগ করেন, আমার লেখা তথ্যে ঠাসা থাকে। সেগুলো মনে রাখা যায় না। দেখুন যে সব তথ্য লিখছি সেগুলো আমারও মনে থাকে না। তথ্য দেওয়ার কারণ পরিস্থিতিটা যতটা নিরপেক্ষ ভাবে বোঝা সম্ভব। কিসের ভিত্তিতে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছচ্ছি, সেটা বলা তো কর্তব্য। তথ্যগুলো পড়ে ভুলে যেতেই পারেন। কিন্তু তা থেকে যে সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যায় সেটা তো ভুলবেন না।
ছোট ও মাঝারি শিল্প বেশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে। অথচ গুজরাটে ছোট ও মাঝারি শিল্পে ব্যাংক ঋণ কমছে। কেন্দ্রীয় সরকারেরই তথ্য অনুযায়ী, গুজরাটে রুগ্ন ছোট ও মাঝারি শিল্পের সংখ্যা ২০১০-১১ সালে ছিল ৪৩২১। ২০১৪-১৫ সেটা বেড়ে হয় ৪৯,৩৮২। ২০০৪-১৪ সালের মধ্যে ৬০ হাজার MSME বন্ধ হয়ে গেছে গুজরাটে। (পড়ুন) (পড়ুন)
জলের খোঁজে গুজরাট
নরেন্দ্র মোদীর নিন্দামন্দের জন্য গুজরাটের কথা টেনে আনলাম না। আসলে উন্নয়নের মডেল হিসেবে এই ‘গুজরাট মডেল’ একমাত্র রাস্তা বলে মনে করে বিজেপি-কংগ্রেস-সিপিএম-তৃণমূল, প্রায় সব রাজনৈতিক দলই। সেটা ভাবেন শহুরে শিক্ষিত বহু মানুষও। তাই রতন টাটা, সজ্জন জিন্দালের বিনিয়োগ টানার ঘোষণার সময় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মুখের সঙ্গে তাজপুর বন্দর গৌতম আদানির হাতে তুলে দেওয়া মমতা ব্যানার্জির মুখের বেশ মিল পাওয়া যায়। 
এই যে বছর বছর মমতা শিল্প সম্মেলন করেন। কেন? তা নিয়ে মিডিয়া প্রচুর সময় খরচ করে। মোদ্দা কথা, শিল্পপতিদের সামনে গলায় গামছা দিয়ে দাঁড়িয়ে বিনিয়োগ টেনে আনুন। কিন্তু যেখানে মুনাফা বেশি শিল্পপতিরা তো সেখানেই বিনিয়োগ করবেন। তাতে মানুষের লাভ হল কিনা, সেটা ভাবতে তাঁদের বয়েই গেছে। মার্ক জুকরবার্গ মেটাভার্সে কিংবা ইলন মাস্ক মহাকাশ-পর্যটনে বিনিয়োগ করছেন। কিংবা ধরুন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। ক্রিকেট টিম, ফুটবল টিম কিনতে টাকা ঢালছেন। কেন? কারণ তাতে মুনাফা আছে তাই। ওই বিপুল বিনিয়োগ কত নতুন কাজের সুযোগ তৈরি করবে, সেটা ভাবা তাঁদের কাজ নয়। কিন্তু সেটাই রাস্তা বলে বোঝায় বিজেপি-কংগ্রেস-সিপিএম-তৃণমূল। বোঝায় আনন্দবাজার।
অর্থনীতির অবস্থা বুঝতে নানা রকম তথ্য হাজির করা হয়, তথ্য হাজির করা যায়। বাস্তবে যা দেখছি-বুঝছি তথ্যের মার মারপ্যাঁচে সহজেই তাকে মিথ্যে বানিয়ে দেওয়া যায়। ১৯৯০ সালে উদার অর্থনীতির নামে যে ব্যবস্থা চালু হয়েছে, দেখা যাবে তার ধাক্কায় দেশে বৈষম্য হুহু করে বাড়ছে। নিচের তালিকা দেখুন। 
সেই ফর্মুলাতেই মোদীর 'গুজরাট মডেল। দেশের অর্থনীতির গাড়ি সেই রাস্তায় চালানোর ফল কী হচ্ছে। বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে আমরা ২০২১ সালের তুলনায় ৬ ধাপ পিছিয়ে এখন ১২১ দেশের মধ্যে ১০৭ নম্বরে। যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সমস্ত দেশ আমাদের আগে। পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপাল, মায়ানমার যথাক্রমে ৯৯, ৬৪, ৮৪, ৮১ ও ৭১ নম্বরে। প্রথম ১৭ দেশের একটি চিন। রাষ্ট্রসংঘের সুখ রিপোর্টে (United Nations' World Happiness Report, 2022) ১৪৬ দেশের মধ্যে ভারত আছে ১৩৬ নম্বরে।
এজন্য মোদী সরকারের সমালোচনা করে ভোটের লাভ হতে পারে। কিন্তু পাবলিকের লাভ হবে না।  গোড়ার কথাটা ভাবতে হবে, কার দিকে তাকিয়ে উন্নয়ন হবে? খেটে খাওয়া নাকি লুটে খাওয়া? 
দেখা যাচ্ছে, বড় বিনিয়োগ মানেই বড় কর্মসংস্থান নয়। ধরুন, আমাদের রাজ্যেই তাজপুরে আদানিদের গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরিতে বিনিয়োগ হবে ২৫ হাজার কোটি টাকা। কাজের সুযোগ তৈরি হবে ৩০ হাজারের কিছু বেশি।
দেশের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে কম কোন রাজ্যে? চমকে যেতে পারেন। ছত্তিসগড়। CMIE তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর, ২০২২ বেকারত্বের হার গুজরাটে ছিল ১.৬%, পশ্চিমবঙ্গে ৩.৩% এবং ছত্তিসগড়ে মাত্র ০.১%। অথচ ছত্তিসগড় দেশের অন্যতম পিছিয়ে থাকা রাজ্য। 
রিপোর্ট বলছে, কংগ্রেস সরকার সাড়ে তিন বছরে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারে এরকম একাধিক সরকারি প্রকল্প চালু করেছে। তার হাত ধরেই ছত্তিসগড়ে ম্যাজিক। কোনও প্রকল্পই দান-ধ্যানের নয়। সব প্রকল্পই রাজ্য অর্থনীতিতে মূল্য সংযোজন (value add) করছে। মানে শুধু নানা ছুতোয় কাচা টাকা মানুষের হাতে দিয়ে তাঁদের হাতে রাখার ছক নয়, একই সঙ্গে উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বাড়ানো। 
একটি উদাহরণ: গোধন ন্যায় যোজনায় গোমূত্র, গোবর কিনে তা দিয়ে সার তৈরি করা হচ্ছে। মানে গোমাংস রাখায় লোককে পিটিয়ে খুন না করে অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য গরুকে কাজে লাগানো হচ্ছে। হস্তশিল্পের বাজার দিতে প্রত্যেক জেলায় ই-মার্ট তৈরি করা হয়েছে। আরও জানতে ক্লিক করুন এখানে বা এখানে কিংবা এখানে
ছত্তিসগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল
দু’ রকম রাস্তায় দু’ রকম সমস্যা দেখা যাচ্ছে। বিনিয়োগ সর্বস্ব গুজরাট মডেলে কর্মসংস্থান বেশি হচ্ছে না। আবার ছত্তিসগড়ের মডেলে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হলেও অর্থনীতিকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করানোর উপযুক্ত হতে পারছে না। 
দিল্লি, তেলঙ্গনা, ওডিশা, পঞ্জাব, তামিলনাড়ুর মতো বিভিন্ন রাজ্যে বেশ কিছু পরীক্ষা চলছে। সুসংহত, বাধাহীন উন্নয়নের নানা ভাবনা হাতেকলমে প্রয়োগ হচ্ছে। সে সব নিয়েও কথা হওয়া দরকার। আমার জ্ঞান-বুদ্ধি-বিবেচনা অনুযায়ী কথা পরের কয়েকটি পর্বে লিখব। 
আপনাদের মতামত চাই। নিচে কমেন্ট বক্সে লিখলে সবচেয়ে ভাল। নাহলে ইমেল বা হোয়াটসঅ্যাপে জানাতে পারেন আমাকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

6 মন্তব্যসমূহ
Unknown বলেছেন…
গ্রামীণ অর্থনৈতিক উন্নয়নের কিছু পথ বাতলান। গ্রামীণ প্রযুক্তি কেন্দ্র খুলে কিভাবে তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব?
গ্রামীণ অর্থনৈতিক উন্নয়নের কিছু পথ বাতলান। গ্রামীণ প্রযুক্তি কেন্দ্র খুলে কিভাবে তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব?>>>> দেখুন, আমি তো বিশেষজ্ঞ নই। আমার ভাবনায় যা আছে, সেটাই বলছি। পথ তো বাতলাতে পারেন বিশেষজ্ঞরা। রাজনীতির লোকেরা অবশ্য এখন সব ব্যাপারেই বিশেষজ্ঞ। কিন্তু আমি তো সে রাজনীতিরও লোক নই।
Unknown বলেছেন…
আপনার লেখা পড়লে অনেক কিছু জানতে পারি বুঝতে পারি যা অনেক সমৃদ্ধ করে এবং তা মতামত গঠনে সহায়তা করে
Unknown বলেছেন…
দুর্দান্ত তথ্য সমৃদ্ধ লেখা ! ভীষণ মনোজ্ঞ বিশ্লেষণ !ভীষণ ভালো লাগলো পড়ে !বৈদুর্য ঘোষাল ! আইনজীবী
sujata বলেছেন…
লেখা গুলো বেশ ভালো কিন্তু একটু ছোট লেখা পড়তে ভালোবাসি। সেই কারণে সব লেখা পড়া হয়ে ওঠে না!
Jhilam Roychowdhury বলেছেন…
Biniyog private hobei. No government initiatives can replace that. That is not primary role of government. The role of government is developing fair policies and ensure stringent regulation related to employment, labour rights, minimum wage and hour for each type of workforce. Taxation and penalties for corporations. Ei bhabe Europe e economic development and equity esheche. Corruption index 86th ranking e thaka ei pora deshe, e din ki ashbe?

Top Post Ad