link text

Breaking Posts

6/trending/recent

Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

আপনাকে বলছি, মাননীয়া #Mamata-disrespects-mental-patients

মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী,
ভাবতে পারেন, আপনাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছি। ভাবতেই পারেন।
আপনি নিজেকে মনে করেন, সর্বশাস্ত্র বিশেষজ্ঞ। আপনি রাজনীতিক, প্রশাসক, কবি, লেখক, গীতিকার, চিত্রশিল্প, বাদ্যযন্ত্রী (কিছু বাদ গেলে ধরিয়ে দেবেন)। এবং বারবারই নানা রকম ভাবে নিজের অজ্ঞতার প্রমাণ দেন। কিন্তু শিক্ষক দিবসে অপরাধ করেছেন। 
এই এতো এতো দুর্নীতি সম্পর্কে নিজে কিছুই জানতেন না, সেই অসহ্য তত্ত্ব প্রমাণ করতে গিয়ে কী বললেন? ভালো লোকও খারাপ হয়। সঙ্গদোষে। এবং অবসাদে (ইংরেজি পরিভাষা ডিপ্রেসন বলেছেন আপনি)। আমি অবসাদে ভোগা মানসিক রোগী। নিজেকে মানসিক রোগী বলতে আমার কোনও কুণ্ঠা বা লজ্জা নেই। কারণ এটা শরীরের কোনও রোগের মতোই, মনের একটা রোগ। শরীরের রোগ বলতে লজ্জা না করলে মনের রোগের কথা বলতে অসুবিধা কী? কিন্তু অনেক মনোরোগী বলতে কুণ্ঠিত হন সামাজিক মনোভাবের কারণে। 
_____________________
-----------------------------------
আমার প্রশ্ন, মানসিক রোগীদের অপমান করার অধিকার আপনাকে কে দিল? আপনি ও আপনারা জানেন, এসব বললে রাজনৈতিক আক্রমণের মুখে পড়তেই হবে না। কারণ এসব সামাজিক বিষয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভাবার বোধই আমাদের নেতাদের আসেনি। আপনি নির্লজ্জের মতো আপনার সরকারের, আপনার দলের, আপনার পরিবারের দুর্নীতি আড়াল করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তা নিয়ে বিভিন্ন পার্টির নেতাদের খেউড় চলছে। তার বেশি কিছু আপনাদের ক্ষমতায় নেই, আশাও করি না। কথাটা হয়ত আপনি বলেছেন, তাই আপনাকেই বলছি। আসলে বলছি রাজ্যের রাজনৈতিক নেতাদের।
এই যেমন ধরুন, বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। কী বললেন? মুখ্যমন্ত্রী পাগলের প্রলাপ বকছেন। তা তো নয়। আপনি জেনে বুঝে মিথ্যে কথা বলছেন পরিবার ও দলের লোকেদের দুর্নীতি ঢাকতে। ওটা পাগলামি নয়, শয়তানি। পাগলামো একটা মানসিক রোগ। শয়তানিকে পাগলামি বলা পাগল, মানে মানসিক রোগীদের অসম্মান করা। এই হলো আমাদের রাজনীতিকদের বোধবুদ্ধি। ওই ভদ্রলোক নামী উকিল, কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। এবং নিজেকে অত্যন্ত প্রাজ্ঞ ও চালাক ভাবতে ভালবাসেন।
মানসিক রোগ, বিশেষত, অবসাদ এই মুহূর্তে সারা দুনিয়ায় মহামারীর চেহারা নিচ্ছে। সে ব্যাপারে সচেতনতা বাড়ানোর নানা চেষ্টা চলছে সারা দুনিয়ায়। কারণ প্রধান সমস্যা হচ্ছে সামাজিক কারণে বা বুঝতে না পারায় অনেকে চিকিৎসা করাতে আসছেন না। সেখানে আমাদের এখানকার মিডিয়া দায়িত্বজ্ঞানহীন ভূমিকা নিচ্ছে। আত্মহত্যা করলে বা এলোমেলো কিছু হলেই অবসাদ ছাপ লাগিয়ে দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীও তেমন। তাঁর প্রতিপক্ষের নেতারাও তেমন। রাজনীতি করতে গেলে, প্রশাসন চালাতে গেলে এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জানতে হয়। 
_____________________________________
-----------------------------------------------------------
ভালো মানুষ খারাপ হওয়ার জন্য অবসাদ দায়ী, এই কথাটা বলায় আপনার শাস্তি হওয়া উচিত। আসলে রাজ্যের বহু ভালো মানুষ খারাপ হচ্ছে আপনার মতো অনৈতিক নেতার জন্য। স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের টাকা না পেয়ে ছাত্রছাত্রী, পেনশন না পেয়ে শিক্ষক, ফসল নষ্ট হওয়ায় মহাজনের ঋণ মেটাতে না পারার ভয়ে কৃষক অবসাদে আত্মঘাতী হচ্ছেন। আপনার, আপনাদের নীতির জন্য। কাজ নেই। গ্রামে-শহরে বহু কম বয়সী আয়ের আশায় যুক্ত হচ্ছে পার্টিতে। তাদের অপরাধে জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।আর আপনার পরিবার, আপনার দলের লোকেরা টাকার পাহাড় বানাচ্ছে। আপনি নির্লজ্জের মতো তাকে আড়াল করছেন। আপনি বোঝানোর চেষ্টা করছেন, বাকিরা দুর্নীতি করলেও আপনি বিলকুল সৎ। সেটা স্বাভাবিক। আপনার কাছে থেকে কোনও নৈতিকতা আশা করি না।  
আপনি নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা জাল করেছিলেন। আপনি একজন মহিলা হয়ে আরেকজন মহিলাকে দিয়ে ধর্ষণের মিথ্যে অভিযোগ করিয়েছিলেন স্রেফ নিজের রাজনৈতিক ধান্দায়। 

কথায় কথায় মিথ্যে বলাটা আপনার অভ্যাস। শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারটাই ধরুন। আপনার নির্দেশে এস পি সিনহার নেতৃত্বে বিশেষ কমিটি হয়েছে। পরে দেখা গেছে তারাই দুর্নীতির মূল কেন্দ্র। প্রথমবার ধর্না হলো। তাঁদের চাকরি দিয়ে ম্যানেজ করলেন। আবার ধর্না। এবার সংখ্যায় বেশি। পার্থ চ্যাটার্জিকে নিয়ে আপনি গেলেন সেখানে। তারপরেও দু'বার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে আপনি সমস্যা মেটানোর ব্যবস্থা করবেন। মামলা হল। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হলো। বাড়তি পাঁচ হাজার শিক্ষক পদ তৈরি করে ধর্নায় বসা প্রার্থীদের নিয়োগের আশ্বাস দিলেন নবান্নের প্রেস কনফারেন্স থেকে। পার্থ চ্যাটার্জি, এস পি সিনহারা গ্রেফতার হওয়ার পর আপনি অবলীলায় বলে দিলেন, কিস্যু জানতেন না। কেউ কেন আপনাকে কিছু জানায়নি বলে কী রাগ দেখালেন! ভাব দেখালেন যেন পার্থ চ্যাটার্জি একাই সব করেছেন। ঘেন্না করলে পার্থকে করো, আমাকে কিছু বলো না। পার্থর বান্ধবী অর্পিতার বাড়ি থেকে প্রায় ৫০ কোটি উদ্ধার হওয়ায় আরও সুবিধা হল। বুড়ো নেতার কচি বান্ধবী নিয়ে রসালো খিল্লি।
তারপর কেষ্ট মণ্ডল গ্রেফতার হলেন। আপনি প্রকাশ্যে সিবিআইকে চ্যালেঞ্জ করলেন। জানেন, কেষ্ট আপনার তৃণমূলের মডেল নেতা। কেষ্টর পাশে না থাকলে দল ধরে রাখা মুশকিল হবে। তারপর কেষ্ট গরু পাচার মামলায় ধরা পড়েছেন। তাতে অন্যতম অভিযুক্ত আপনার প্রিয় ভাইপো। যাঁরা আপনাকে চেনেন, তাঁরা জানেন, আপনি শুধু নিজেকে ভালোবাসেন। নিজের স্বার্থে যে কাউকে যখন তখন ছুঁড়ে ফেলে দিতে আপনি ওস্তাদ।
আপনি ক্ষমতায় এসেছেন বিকল্প কিছু না থাকায়। সব জিনিসেরই এক্সপেয়ারি ডেট থাকে। তৃতীয় বড় ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে আপনার সরকার মেয়াদ উত্তীর্ণ সরকারে পরিণত হয়েছে। যাওয়াটা সময়ের অপেক্ষা। কারণ আপনার নেতৃত্বে আপনার সরকার ও দলের চুরি, গুন্ডামি, মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া, রাজ্যের অর্থনীতিকে দেউলিয়া হওয়ার পথে নিয়ে যাওয়া, নির্বিকার মুখে আপনার মিথ্যে কথা বলা দেখতে দেখতে মানুষ অবসাদে ভুগতে শুরু করেছেন। সুস্থ হতে আপনার সরকারকে বিদায় দিতে হবে, এটাই ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন।
আপনি বামফ্রন্ট বিরোধী প্রধান মুখ হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু শুধু সে কারণেই আপনাকে মুখ্যমন্ত্রী করেনি বাংলা। আরও অনেকের মতো আমিও চেয়েছিলাম শেষ হোক বামফ্রন্ট সরকারের নীতিহীন শাসন। 

বিকল্প ছিল না। আপনি মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তারপর যে রাজনৈতিক শক্তির উত্থানের আশা করেছিলাম। হয়নি। আপনার হাতে বাংলার যা চেহারা সেটা আমার কাছে অপ্রত্যাশিত নয়। আপনার বিরোধীদের মতো আমি মনে করি না, আপনার সরকারের সব খারাপ। বিশেষত গ্রামীন এলাকার রাস্তাঘাট এবং কন্যাশ্রী প্রকল্পের কথা উল্লেখ করতে চাই। কিন্তু সে সব হারিয়ে যাচ্ছে, যেভাবে রাজ্যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ভেঙে, দুর্নীতি আর দুষ্কৃতীদের রাজত্ব কায়েম হয়েছে আপনার জমানায়। রাজ্যের অর্থনীতি দেউলিয়া হওয়ার পথে। 

কর্মচারীরা অবসরের পর বকেয়া পাচ্ছেন না, পেনশন পাচ্ছেন না, সরকারি কর্মচারিরা ডিএ পান না, অথচ আপনি দিব্যি ক্লাবগুলোকে টাকা দিয়ে যাচ্ছেন। ভোটের অঙ্কে 'লক্ষ্মীর ভান্ডার' করে জলের মতো টাকা খরচ করে যাচ্ছেন। 
২০১৬ সালের ভোটে বিরোধী শিবিরের উপর মানুষ ভরসা করার কারণ খুঁজে পাননি। তাই আপনি জিতেছিলেন। আর ২০২১ তো বিজেপি বিরোধিতায় বাধ্য হয়ে রাজ্য আপনার হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়েছে। কিন্তু আপনার মেয়াদ শেষ। 
বিকল্প? নেই এখনও।
নেতাদের কথায় বোঝা যায় মানুষ সম্পর্কে কী ভাবেন তাঁরা। দিলীপ ঘোষ বললেন, তৃণমূল বস্তির লোকের সংস্কৃতিতে চলে। সৌগত রায় বলছেন, দিলীপ ঘোষ এইট পাশ। তাঁর কথার জবাব দেবেন নাৎ বস্তির মানুষ বা ক্লাস এইট পাশ করা মানুষ কি জঞ্জাল? ভোটের আগে তাঁদের সামনে গিয়েই তো হাত কচলাবেন। গুন্ডাদের ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন রাজনীতিকরা। যেমন আপনি বলেন। যেমন দিলীপ ঘোষ বলেন। যেমন সুশান্ত ঘোষ বলেন। যেমন মিনাক্ষী মুখার্জি বলেন। নাহলে তাওয়া গরম হয় না। মানুষের রোজকার কোনও কথা নেই। শুধু ক্ষমতার অঙ্ক।
অন্য কোনও উপায় না বেরোলে আপনার বদলে ওদেরই কাউকে বেছে নেবে বাংলা। তাতে হাল বদলাবে না। নতুন কোনও শক্তি তৈরির ব্যাপারে যদিও আমি আশাবাদী। তার হাত ধরেই দীর্ঘ অবসাদ কাল কাটিয়ে জেগে উঠবে বাংলা।
চাই না, তবু তখন যদি এই অবসাদ আপনাকে গ্রাস করে। হয়তো তখন বুঝবেন, অবসাদ মানে কী। 
ভালো থাকবেন।
__________________________

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

3 মন্তব্যসমূহ
নামহীন বলেছেন…
সত্যিই আপনার লেখাগুলো শুধু তথ্য নির্ভরশীল নয় সাধারণভাবে ভাবা ভাবনাগুলোকেও নাড়িয়ে দেয় । লিখতে থাকুন আপনার লেখা গুলি নিয়মিত পড়ি সবসময় মন্তব্য করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা । সুশান্ত
সমস্যাটা হচ্ছে বিকল্প রাজনীতির জন্য একটি ভাবনা দরকার। খুব পরিষ্কার এই অচলায়তনে সেই ভাবনার কোনো সুযোগ নেই। কারণ ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু এখনও সেই মার্কস, লেনিনেই আটকে রয়েছে। মার্ক্স ও লেনিনের কাউন্টার হচ্ছে জাতীয়তাবাদ, যে জাতীয়তাবাদের কোনো ভিত্তি নেই। অন্তত বাম বিরোধী কেউই বলতে পারবে না তাদের জাতীয়তাবাদের ভিত্তি কী। এই পরিস্থিতিতে দরকার ফ্রেশ ভাবনার। কিন্তু বামদের আমল থেকে শিরায় মজ্জায় ঢুকিয়ে দেওয়া সুখের চেয়ে স্বস্তি ভালো নীতির প্রয়োগ এখনও চলমান। আর তার সুযোগ্য ব্যবহার করেছেন মমতা। মানুষ এখানে ভাবতে ভুলে গিয়েছে। তাদের চিন্তার জগৎ ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে। ধ্বংস ছাড়া অন্য কোনো পন্থা নেই বাংলার মানুষকে মানুষ করার।
নামহীন বলেছেন…
Osadharon bisleson as always. Somossa ta holo er poreo kono kichur poriborton hobe na . Sob kichui aro kharap er dike jabe

Top Post Ad