link text

Breaking Posts

6/trending/recent

Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

মাননীয় বিচারপতি, নাটক নয়, ন্যায়বিচার চাই #Nupur#SC#Zubair#Udaipur

একজন পাশের বাড়িতে ঢুকে পিটিয়ে মেরে আগুন জ্বালিয়ে এল। পাড়ার দাদা শুনে তুমুল ধমকধামক দিয়ে বলল, মাথা কিনে নিয়েছ? যাও, পাড়ার সবার সামনে ক্ষমা চাও।

আরেকজন বাড়ির দেওয়ালে ঘুঁটে দিয়েছিল। বেপাড়ার একটা লোক এসে বলল, কী কুৎসিত দৃশ্য! শুনেই পাড়ার সেই দাদা ঘুঁটে সাঁটাকে হাত পা বেঁধে অন্ধকার ঘরে ঢুকিয়ে দিল দরজায় তালা দিয়ে।
পাড়ার দাদার বিচারে ধন্য ধন্য পরে গেল।
কোর্টের হালচাল দেখে তুলনাটা মনে এল। 
নূপুর শর্মা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট কী বলল? 

নূপুর একা হাতে দেশজুড়ে এই মুহূর্তের অশান্তির আবহ তৈরি করেছেন। দেশের মানুষের আবেগকে অমর্যাদা করেছেন। (SC slams Nupur Sharma)

রাজস্থানের উদয়পুরের নৃশংসতার কারণও নূপুরের মন্তব্য। 

'আপনি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে সেই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু কেউ আপনাকে ছুঁতে পারে না। তাতে তাঁর প্রভাব বোঝা যাচ্ছে।'

নুপুররা ধার্মিক নন, উস্কানি দিতে ওসব বলেন।  

নূপুর একটি দলের মুখপাত্র তো কী হয়েছে?

দিল্লি পুলিশ কী করেছে?

কোনও উদ্দেশ্য না থাকলে টিভি চ্যানেল বিচারাধীন বিষয়ে বিতর্ক বসায় কী করে? 

‘আমরা বিতর্কসভা দেখেছি। যে ভাবে তিনি কথাগুলো বলেছেন, তা-ও দেখেছি।'

'অনেক দেরিতে ক্ষমা চেয়েছেন, তা-ও শর্তসাপেক্ষে। বলেছেন, যদি ভাবাবেগে আঘাত করে থাকি।' 

টিভিতে সারা দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত নূপুরের। 

অনেকে উদ্বাহু হয়ে বলছেন দেখছি, নূপুরকে কেমন টাইট দিল সুপ্রিম কোর্ট!

অল্ট নিউজের সহ প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ জুবের। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। (Alt News co-founder Mohammed Zubair arrested for allegedly hurting religious sentiments)
জুবের হৃষিকেশ মুখার্জির 'কিসি সে না কহেনা'-র একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছিলেন '২০১৪-র আগে ছিল হনিমুন হোটেল, ২০১৪-র পরে হনুমান হোটেল।' পোস্টটা করেছিলেন ২০১৮ সালে। তাতে কোথাও কোনও অশান্তির অভিযোগ ওঠেনি। কে অভিযোগ করেছেন? পুলিশ বলতে পারছে না। গত ১৯ জুন 'হনুমান ভক্ত' নামে একজন জুবেরের ৪ বছর আগের ওই টুইটে দিল্লি পুলিশকে ট্যাগ করে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ করেন। @balajikijaiin নামে ওই টুইটার হ্যান্ডেল তৈরি হয়েছে ২০২১ সালের অক্টোবরে। তাতে প্রথম পোস্ট ওই ১৯ জুনই। 
সবাই জানে, বিজেপির প্রবল শক্তিশালী আইটি সেল বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এরকম অসংখ্য ভুয়ো আইডি তৈরি করে রাখে। নূপুরের বক্তব্যের সব ভিডিও ফুটেজ সব জায়গা থেকে সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করা হয়। জুবের সেই ভিডিও টুইট করাতেই এত হইচই। জুবেরের উপর জ্বালাটা সে জন্যই।
কোর্ট জুবেরকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
নূপুর, জুবের দুজনের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত।
অতি তৎপর দিল্লি পুলিশ জুবেরকে গ্রেফতার করেছে। যদিও ৪ বছর আগে তাঁর পোস্টে অশান্তির কোনও ঘটনা নেই।
নূপুর শর্মার মন্তব্য সারা দেশে সাম্প্রতিক অশান্তির কারণ। বলছে সুপ্রিম কোর্ট। নূপুর দিল্লিতেই আছেন দিল্লি পুলিশের নিরাপত্তায়।
সুপ্রিম কোর্ট বলার পরে রাতে দিল্লি পুলিশ জানাল, গত সপ্তাহে নূপুরের বক্তব্য নথিভূক্ত করা হয়েছে। সকালে সুপ্রিম কোর্টে কিন্তু উচ্চবাচ্য করেনি। সত্যি গত সপ্তাহে নূপুরের বক্তব্য নথিভূক্ত করে থাকলে সেটা বলবে না? অসম্ভব। 
যাঁর মন্তব্যে দেশজুড়ে অশান্তি ছড়িয়েছে, খুন হয়েছে, তাঁকে পাহারা দিচ্ছে অমিত শাহের পুলিশ। সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় বিচারপতিরা জানেন না?
ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন। সারা দেশে অশান্তি ছড়িয়েছেন। দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয় বলল, টিভিতে দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।কেমন মিষ্টি ব্যাপার বলুন!

বলতে পারলেন না তো, নূপুরকে এখনই গ্রেফতার করতে হবে। কেন গ্রেফতার না করে উল্টে নিরাপত্তা দিচ্ছে পুলিশ?

খেয়াল করুন, সুপ্রিম কোর্ট কিন্তু রায় দিয়েই দিয়েছে, নূপুরের জন্যই অশান্তি ছড়িয়েছে। নূপুরের জন্যই উদয়পুরের নৃশংসতা। বাকিটা বলতে আটকাল কেন? দিল্লির পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে বলে?

সুপ্রিম কোর্ট বলল, আপনি অভিযোগ করলে পুলিশ চটপট গ্রেফতার করে। জুবেরের ঘটনার দিকেই নিশ্চয়ই ইঙ্গিত। মাননীয় বিচারপতিরা সরাসরি বলতে পারলেন না কেন? ভয়ে? দিল্লির পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে বলে?

নাকি পুরোটাই স্রেফ চোখে ধুলো দেওয়া? 

সুপ্রিম কোর্ট বলল, নূপুরের জন্যই উদয়পুরে নৃশংস খুন। ইসলামী জঙ্গি মৌলবাদকে আড়ালের চেষ্টা হল না? (SC Blames Nupur Sharma For Udaipur Beheading)

অশান্তির আবহকে কাজে লাগিয়ে পরিকল্পিত বর্বরতা হয়েছে উদয়পুরে। তাতে খানিকটা কোণঠাসা হিন্দু সাম্প্রদায়িক জঙ্গিরা অক্সিজেন পেল। এটাই তো ছক। (Udaipur tailor murder could be handiwork of terror gang: NIA) হিন্দু আর ইসলামী মৌলবাদকে দুই মেরুর বলে দেখানো হয়, বাস্তবে ওরা একে অন্যকে সাহায্য করতে করতে এগিয়ে যায়। এই সহজ কথাটা মহামান্য বিচারপতিরা জানেন না? 

শুধু হিন্দু সাম্প্রদায়িক শক্তিকে নয়, মুসলিম সাম্প্রদায়িক শক্তিও কি সুপ্রিম কোর্টের কথায় আড়াল পেল না?   

নূপুরের মন্তব্য ঘিরে অশান্তি ছড়িয়েছে। আগুন জ্বলেছে। খুন হয়েছে। যোগীর বুলডোজার অভিযুক্তদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ ভারতের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে। নূপুরের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বিভিন্ন দেশ বিজেপির বিবৃতিতেই খুশির কথা জানিয়েছে। নূপুরকে 'দলের অবস্থানের বিপরীত মত প্রকাশ করায় দল ও দায়িত্ব থেকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত' করা হয়েছে। জেপি নাড্ডা নন, বিবৃতিতে সই করেছেন বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিং।
কেন্দ্রীয় সরকার কিন্তু কোনও বিবৃতি দেয়নি। OIC-র বিবৃতির জবাব দিয়েছে বিদেশমন্ত্রক। সঙ্গে পাকিস্তানকে তেড়ে খিস্তি। অমিত শাহের দিল্লি পুলিশ আইন মেনে নূপুরকে গ্রেফতার তো করেইনি, উল্টে দিল্লি পুলিশের নিরাপত্তায় তিনি লুকিয়ে আছেন। বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ। কিন্তু তিনি কোথাও যাচ্ছেন না। অন্য কোথাও যেতে ভয় পাচ্ছেন, তাই সব অভিযোগ দিল্লিতে নিয়ে আসা হোক, সুপ্রিম কোর্টে এই আবেদনই জানিয়েছিলেন নূপুর। 

সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। তাহলে? এবার নূপুর শর্মা টিভিতে বিবৃতি দেবেন? তারপর বিভিন্ন রাজ্যের থানায় থানায় হাজিরা দিতে যাবেন? যদি গোলমাল পাকে? গোলমাল পাকানোর লোক কি কম আছে? আমাদের রাজ্যেই ধরুন না, দুই সিদ্দিকির মধুর বচন তো শুনেছি, ১১ ঘণ্টা জাতীয় সড়ক আটকে রাখা, চার দিন ধরে বেপরোয়া হিংসা তো দেখেছি। 

লালকৃষ্ণ আদবানি ১৯৯০ সালে দেশজুড়ে 'রথ' ছুটিয়ে, আগুন জ্বালিয়ে হয়ে গিয়েছেন 'লৌহপুরুষ'। এবার নূপুর শর্মা রাজনৈতিক হিন্দুত্বের নতুন আইকন? সুপ্রিম কোর্ট দায় এড়াতে পারবে? 

এত এত কথা না বলে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা বলতে পারতেন না নূপুরকে সুপ্রিম কোর্টে সশরীরে এসে ক্ষমা চাইতে হবে? বলতে পারতেন না নূপুরকে এখনই গ্রেফতার করতে হবে? বলতে পারতেন না, এতদিন নূপুরকে গ্রেফতার না করায় দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে? বলতে পারতেন না, কেন্দ্রীয় সরকারকে বিবৃতি দিয়ে নিন্দা করতে হবে? দেশের সম্মান নিয়ে সদা চিন্তিত প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিদেশমন্ত্রী, কেউ কোনও বিবৃতি দেননি।
সুপ্রিম কোর্ট কৌশলে ব্যাপারটা ব্যক্তি নূপুরের ঘাড়ে ঠেলে দিল। কিন্তু বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র নূপুর মুখ ফসকে ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করে ফেলেছেন, এই যুক্তিটা বড্ড দুর্বল।  তাহলে নবীন জিন্দল নামে আরও এক বিজেপি নেতা সেই একই কথা টুইট করলেন কেন? নূপুর ভুল কী বলেছেন, প্রচার চালাল কারা? সুপ্রিম কোর্ট ধমকধামক দেওয়ার পর আমাদের রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কী বললেন? রামচন্দ্র সম্পর্কে কেউ কবিতা লিখতে পারলে নূপুর শর্মাও তো কারও সম্পর্কে মত প্রকাশ করতেই পারেন। সেটা তাঁর বাক স্বাধীনতা।
পুরোটাই চোখে ধুলো দেওয়া। এবং বিচার বিভাগও তার অংশ হিসেবেই ভূমিকা পালন করছে। 
এই সেদিন গুজরাট হিংসা মামলায় প্রধানমন্ত্রীকে ক্লিনচিট দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলল, মামলা দায়েরের পেছনে অসৎ, ঘৃণ্য চক্রান্ত কাজ করেছিল। পদ্ধতির অপব্যবহারের জন্য যাঁরা দায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। পরদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোজাসুজি সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাদের দিকে আঙুল তুললেন। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গুজরাট পুলিশ মুম্বই গিয়ে তিস্তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে এল। গ্রেফতার হলেন গুজরাট পুলিশের প্রাক্তন ডিজি আর বি শ্রীকুমার। অভিযোগ গুজরাটের সাসপেন্ড হওয়া আইপিএস (এখন জেলে) কাশ্মীরি পণ্ডিত সঞ্জীব ভাটের বিরুদ্ধেও। হাতিয়ার সুপ্রিম কোর্টের ওই মন্তব্য। 
ইদানীং একটা প্রবণতা চোখে পড়ছে। টুইটারের নেতাদের বিবৃতি। কিছু হলেই কোর্টং শরণং গচ্ছামি। এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় 'তুলকালাম বিপ্লব'।
আইনসভা এখন 'ঘোড়া কেনাবেচার জমজমাট মাঠ'।
প্রশাসন এখন 'পুতুল নাচের ইতিকথা'।
মিডিয়া এখন 'শাসকের ইচ্ছেয় লাফায় শুধু তিড়িংবিড়িং'।

সংবিধান রক্ষার দায়িত্ব বিচার ব্যবস্থার। সেটা... 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

4 মন্তব্যসমূহ
নামহীন বলেছেন…
খুব সুন্দর তথ্য দিয়ে লেখা
নামহীন বলেছেন…
সঠিক লেখা।
SUJOY বলেছেন…
Zubair এর একটা NGO আছে , তাঁদের funding কে করছে ?? ALT news Anti BJP stand নিয়ে চলে । । আর নুপুর শর্মা কে গ্রেফতার করলে কি অশান্তি আরো বাড়বে না ? আগুন নিয়ে খেলা উচিত না । Pseudo Secular ... হবার কোনো প্রয়োজন নেই ।
নামহীন বলেছেন…
কতগুলো শব্দ শিখে যেখানে সেখানে গুঁজে দেওয়া ভক্ত কুলের রোগ। তুইও সেই দলে ভিরেছিস? সিউডো সেকুলার। মাকু সেকু ভাম। জুবেরের এন জি ও আছে। তুই বলছিস। মানলাম। কী অসুবিধা? বেআইনি? প্রশাসন ব্যবস্থা নিক। কী ইস্যুতে গ্রেফতার? সুস্থ মানুষ প্রতিবাদ করবে। তুই সমর্থন করছিস। নূপুর অপরাধ করেছে। সুপ্রিম কোর্টই বলল। তাহলে গ্রেফতার করতে হবে। এতো আজব যুক্তি! তাতে আগুন জ্বলবে। প্রশাসন কী করবে? একটা মতের পক্ষে অবস্থান নিয়ে ফেলেছিস যা একটা মিথ্যে বোঝাপড়ার ওপর দাঁড়িয়ে। সব বিষয়ে নাক গলালে নিজের ফাঁপা চেহারাটা বেরিয়ে যায়।

Top Post Ad