-অভিযোগ সত্য।
-আমি কিন্তু আপনার কোট চাইছি। কপির জন্য লাগবে।
-বললাম তো, লেখ, অভিযোগ সত্য।
তখন আমি আনন্দবাজারে চাকরি করি। ফোনের ও প্রান্তে সিপিএমের তৎকালীন রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাস।
অভিযোগটা কী?
আমার আত্মীয় প্রদীপ চ্যাটার্জি (বেণু) থাকেন সন্তোষপুরে। জমজমাট মানুষ। পরোপকারে আছেন, দুর্গাপুজোয় আছেন। আপাদমস্তক কংগ্রেস। একসময় ছিলেন মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে। তৃণমূল তৈরির পরও কংগ্রেসেই থেকে গেছেন। সম্ভবত তখন আমি খাস খবরে চাকরি করি। এক ভদ্রলোককে নিয়ে আমার বাড়িতে হাজির বেণুদা।শ্যামল চন্দ। কেন্দ্রীয় পূর্ত বিভাগে চাকরি করেন। সিপিআইএমের কট্টর সমর্থক শুধু না কর্মীও। গ্রুপ থিয়েটারের সঙ্গেও যুক্ত। মায়ের মরদেহ শুইয়ে রেখে নিয়েছিলেন নাটকের শো করতে। থাকতেন বেলেঘাটায়।
শ্যামলবাবুর বাড়ির একটা ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন সিপিআইএমের ব্রাঞ্চের এক সদস্য। ক্রমশ বাড়ির বেশ কিছুটা অংশ কব্জা করে নেন। শ্যামলবাবুদেরই এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যেতে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। ছাড়তে বললেও ছাড়ছেন না। মানব মুখার্জি-সহ এলাকার বিভিন্ন সিপিএম নেতার কাছে গিয়েও কাজ হয়নি। শ্যামলবাবুর মা ও স্ত্রী, দুজনই সেরিব্রাল অ্যাটাকে পঙ্গু। ভাড়াটে পার্টির লোক বলে পুলিশেও অভিযোগ জানাতে রাজি নন নিতান্তই ছাপোষা মানুষ শ্যামলবাবু। নেতাদের বলে কাজ হচ্ছে না, পুলিশকে বললে কী হবে সেটা তো বোঝাই যায়। খবর করলে যদি সুরাহা হয়, এই আশায় আমার কাছে শ্যামলবাবুকে নিয়ে এসেছে বেণুদা।
বলেছিলাম, মিডিয়ায় দেখালে কাজ হবে বলে মনে হয় না। অনিল বিশ্বাসকে ফোন করে ওঁর কাছে পাঠাই শ্যামলবাবুকে। অনিলদাকে লিখিত ভাবে সব জানান শ্যামলবাবু। আগে বিভিন্ন জায়গায় যে সব চিঠিচাপাটি করেছেন, সব দেন। নিজের হাতে নোট লিখে অনিলদা শ্যামলবাবুকে পাঠান রূপা বাগচীর কাছে।
তারপর অনেক সময় গড়িয়ে গেছে। আমিও ভুলে গেছি। বছর দুয়েক পরে একদিন শ্যামলবাবু ফোন করলেন। কোনও কাজ হয়নি। ঠিক করলাম, খবরটা করব। নিউজ এডিটর হীরকদার (ব্যানার্জি) অনুমতি নিয়ে লিখলাম। এডিটোরিয়াল মিটিং থেকে বেরিয়ে হীরকদা বলল, সুমনদা (আনন্দবাজারের সে সময়ের এক্সিকিউটিভ এডিটর সুমন চট্টোপাধ্যায়) বলেছে অনিলদার কোট ছাড়া এই কপি যাবে না।
একটু মুষড়েই পরলাম। অনিলদা কি বলবেন কিছু? জয় মা বলে ফোন করলাম। তারপর?
কী কথা হল, সে তো আগেই লিখেছি। খবরটা বেরলো। অনেকে বললেন, দারুণ কপি। কিন্তু শ্যামলবাবুর সমস্যা আরও বেড়ে গেল।
মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আপ্তসহায়ক ছিলেন জয়দীপ মুখার্জি। আমরা একই কলেজের ছাত্র। কলেজ এবং লোকাল স্তরে একসঙ্গে এসএফআই-এর কাজও করেছি। সব শুনে জয়দীপ পুলিশ দিয়ে তুলে দেওয়ার কথা বলল। জানতাম সেটা সম্ভব নয়।
তারপর কী হয়েছিল, জানি না। তবে শ্যামলবাবুর কাজ কিছু হয়নি।
শ্যামলবাবু, তাঁর মা ও স্ত্রী প্রায় পরপরই প্রয়াত হন।
ঘটনা:২
তখন আনন্দবাজারে। খবর পেলাম, ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডে জয়শ্রী মোড়ের কাছে একটি অবাঙালি ছেলের ঘর দখল করে উদ্বাস্তু সংগঠনের বোর্ড আর পতাকা ঝুলিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় সিপিআইএম নেতারা। খবরটা বেরোল, তাতে সিপিআইএমের তৎকালীন লোকাল সম্পাদক প্ররদীপ দত্তের মন্তব্যও ছিল। শুনলাম, খবরটা বেরনোর পরে ওখানে মিটিং করে গণেশ গুহ ঠাকুরতা, প্রদীপ দত্ত সহ সিপিআইএমের জেলা-জোনাল ও লোকাল স্তরের কয়েকজন নেতা আমাকে তুমুল আক্রমণ করেছেন। রাজনীতি করার সময় ওই লোকাল-জোনাল-জেলায় আমার কিছুটা পরিচিতি ছিল। হয়তো সে জন্যই। হয়তো নয়। আমি না হয়ে অন্য কেউ খবরটা করলেও হয়তো তাঁকেও আক্রমণের মুখে পড়তে হত।
ছেলেটি ঘর ফেরত পাননি। কলকাতা ছেড়ে ফিরে গেছেন উত্তরপ্রদেশে।
অনেকে ভাবতে পারেন, সিপিআইএমের নিন্দামন্দের আসর বসাতে চাইছি। মাফ করবেন। সিপিআইএম নিয়ে কথা বলার তেমন উৎসাহ আজ আর পাই না। আসলে অনেকে অনেক সময় জানতে চেয়েছেন, এখনও কয়েক জন জানতে চান, কেন আমি রাজনীতি থেকে সরে গেলাম। তাই উদাহরণ দুটো দিলাম।
হাড়ির সব ভাত ফুটেছে কিনা বুঝতে সব চাল টিপে দেখতে হয়?
উদাহরণ দুটো দিলাম কলকাতা শহরের। এসএফআই কর্মী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে গ্রাম, মফসসল, জেলা শহরের ছবি দেখারও সুযোগ হয়েছে।
সে সব উদাহরণ টানব না নৈতিক কারণেই। তবে সে সব দেখে উপলব্ধির কথা আসবে।
উদাহরণ দুটোয় স্পষ্ট, দখলদারির সংস্কৃতি কতটা মাথায় চড়ে বসেছিল যে পার্টি ও সরকারের মাথারাও কিচ্ছুটি করতে পারেননি। এবং একটি গরীব ছেলের ঘর দখল করে নেওয়ার পরেও মাইক খাটিয়ে তার পক্ষে সওয়াল করতে নেমে পড়েন তাবড় নেতারা।
অপারেশন (পার্টির ভিতরে থেকে লড়াই) করে এই রোগ সারে? সেরেছে? রাজ্যের ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার ১১ বছর পরেও সেই রোগ গেছে? এখন তৃণমূল কংগ্রেসের গাজোয়ারি-জবরদস্তি-তোলাবাজি-কাটমানি নিয়ে সরব সিপিআইএম কখনও ভেবে দেখে রোগের উৎসটা কোথায়? কেন? কীভাবে?
![]() |
| যৌবন। আমার বাবা-মা। সমরেন্দ্র প্রসাদ ও আরতি ঘোষ |
পরে মায়ের কাছে শুনলাম, হাসপাতালের হাল আরও ভাল করতে টাকা দেবেন বলে গেছেন মন্ত্রী। বছর গড়িয়ে গেলেও এক পয়সাও এল না। সিদ্ধান্তে পৌঁছলাম, কংগ্রেস ভালো না। ওদের মন্ত্রীরা কথা দিয়ে কথা রাখেন না। মিথ্যে কথা বলেন।
যে কোনও কারণেই হোক, সে সময় ভাবতাম আমার মা-বাবাও কংগ্রেস সমর্থক। হঠাৎ একদিন দেখি বাবা তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে মাকে উত্তেজিত ভাবে কী যেন বলছে। তারপর দুজনের গলাতেই খুশির জোয়ার। সেদিন প্রথম সিপিআইএম শুনলাম, জ্যোতি বসু শুনলাম। শুনলাম, কংগ্রেস হেরে গেছে। শুনলাম, এবার সিপিএম সরকার বানাবে। শুনলাম, জ্যোতি বসু মুখ্যমন্ত্রী হবেন। সেদিন বুঝলাম, আমার বাবা-মা সিপিআইএমের সমর্থক। জানলাম, শীতলকুচি থানার গারদে বন্দি বাবার বন্ধু এবং দিদির স্কুলের শিক্ষক শৈলেন মিশ্র ছিলেন সিপিএম নেতা। সেজন্যই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
শীতলকুচিতে আমরা থাকতাম হাসপাতাল কোয়ার্টারে। মাঝে হাসপাতাল। দু দিকে স্টাফ কোয়ার্টার। ডাক্তার-নার্স-কেরানি-ড্রাইভার-ডোম, সবাই থাকতেন সেখানে। নারায়ণের বাবা ছিলেন সাফাইকর্মী। ওদের বাড়িতে বেশ কয়েকটা শুয়োর ছিল। বেশ ভয়ই লাগত। আমাদের ওঠা-বসা-খেলা সব ছিল একসঙ্গে। উল্টোদিকে থাকত আমাদের বন্ধু আনোয়ার (নাকি মকবুল?)।
সত্যি বলতে শীতলকুচির ছোটবেলার ঘটনাগুলোই মনের মধ্যে ধর্ম-জাতপাত নিয়ে ভাগাভাগির ধারণা গড়ে উঠতে দেয়নি কখনও। বাড়িতেও সেসব নিয়ে কথা হত না।
![]() |
| আমার কুট্টিদাদু নরেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ |
আমার বাবা-কাকা-পিসিদের আদর্শ ছিলেন তাঁদের ছোট কাকা নরেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ (আমার কুট্টিদাদু)। অনুশীলন সমিতিতে যুক্ত ছিলেন। ব্রিটিশ তাঁকে পাঠিয়েছিল আন্দামানের সেলুলার জেলে। সেখানেই কমিউনিস্ট মতাদর্শে আকৃষ্ট হন। মুক্তির পর যোগ দেন কমিউনিস্ট পার্টিতে। শুধু কুট্টিদাদুই নয়, সেলুলার জেল থেকে ছাড়া পাওয়া অনেকেই যোগ দিয়েছিলেন কমিউনিস্ট পার্টিতে।
এখন দেশপ্রেমের ঠিকা নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী আর তাঁর চ্যালারা। উঁচু লম্বা জাতীয় পতাকা, সিনেমা শুরুর আগে জাতীয় সংগীত, বিশাল অশোক স্তম্ভ, আন্দামানে নেতাজির পদার্পণ স্মরণে ১৫০ ফুটি জাতীয় পতাকা। দেশপ্রেম হচ্ছে! 'দেশ কি গদ্দারো কো গোলি মারো শালে কো'। কথায় কথায় দেশপ্রেম দেশপ্রেম এবং দেশপ্রেম।
আচ্ছা, একজন স্বাধীনতা যোদ্ধাও কেন সেলুলার জেল থেকে বেরিয়ে আরএসএস-এ যোগ দিলেন না? ওই মতবাদই নাকি সনাতন ভারতের কথা? যাঁরা দেশ স্বাধীন করতে জান কবুল করেছেন, তাঁরা জানতেন না?
মোদী অ্যান্ড কোম্পানি শুধু হইচই করে দামোদর বিনায়ক সাভারকারকে নিয়ে। তিনি ও তাঁর দাদা ছিলেন সেলুলার জেলে। বিনায়ক দামোদর সাভারকার অত্যন্ত সাহসী, দেশপ্রেমী, সুসংগঠক ছিলেন। কিন্তু সেই সাভারকারের মৃত্যু হয় সেলুলার জেলে।
নতুন সাভারকার জেল থেকে ছাড়া পেয়ে রাজনৈতিক হিন্দুত্বের তত্ত্বের জন্ম দিলেন, ব্রিটিশের পায়ে আত্মসমর্পণ করলেন, হিন্দু মহাসভার নেতা হলেন, ব্রিটিশ বাহিনীতে হিন্দুদের নিয়োগ করলেন, ওই বাহিনী উত্তর-পূর্ব ভারতে আজাদ হিন্দ ফৌজকে খতম করতে কাজে লাগল। সেই সাভারকারের মতো দেশদ্রোহী এখন আরএসএস-বিজেপিওয়ালাদের নয়ণের মণি।
কখনও মোদী, কখনও অমিত শাহ, কখনও কঙ্গনা রানাওয়াত সেখানে মিডিয়ার ক্যামেরা সঙ্গে নিয়ে গিয়ে ধ্যান করেন। সেই ছবি প্রচার করেন।
![]() |
| 'সাভারকার সেল'। মোদী-কঙ্গনা-শাহ |
হাস্যকর! বলা হচ্ছে, ভয়ানক সাভারকারের জন্য দুটো দরজা লাগানো সেল নির্দিষ্ট করা হয়েছিল। সেটার নাম দেওয়া হয়েছে সাভারকার সেল। কিন্তু সেলুলার জেলে তো কাউকেই এক সেলে বেশি দিন রাখা হত না। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রাখা হত। যা করা হচ্ছে সেটা তো সাভারকারেরই অপমান! অন্য স্বাধীনতা যোদ্ধাদের অপমান!
এমন ভাবে প্রচার করা হয় যেন তেলের ঘানি টানার সাজা শুধু সাভারকারকেই দেওয়া হয়েছিল। মিথ্য বলো। মিথ্যে না বলে উপায় নেই। বারবার মিথ্যে বলো। তাহলে লোকে সেটা সত্য মনে করতে শুরু করবে। পরিকল্পিত ভাবে সেই কৌশল নিয়েই চলছে সঙ্ঘ পরিবার। ক্ষমতা আর গলার জোরে সব বদলে দেওয়া হচ্ছে।
সেলুলার জেলের বাইরের পার্কের নাম দেওয়া হয়েছে সাঙারকারের নামে। লাইট অ্যান্ড সাউন্ড জুড়ে শুধুই সাভারকার। পোর্টব্লেয়ার বিমানবন্দর সাভারকারের নামে। তিনিই তো ভগবত-মোদীদের হাতের পাঁচ। তিনি ছাড়া সঙ্ঘ পরিবারের সুবিশাল সাম্রাজ্যে আর স্বাধীনতা সংগ্রামী কোথায় (হোক না কিছুদিনের জন্য)।
সেলুলার জেলের প্রথম বন্দির নাম আবদুল্লাহ মহিউদ্দিন।
জেলের দেওয়ালে ১৮৫৮ সালের ১০ মার্চ থেকে ১৯৩৮ পর্যন্ত ৯৬৬ জন বন্দির নামের তালিকা ছিল। মোদী সরকার জেল সংস্কারের পরে যে নতুন তালিকা ঝুলিয়েছে তাতে ৪৫৩ জন স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাম বাদ।
![]() |
| পুরোনো তালিকার ১০ নম্বর ফলকে কুট্টিদাদুর নাম |
১৯০৯ সালের আগে সেলুলার জেলে বন্দি থাকা কারও নামই নেই। কারণ, সিপাহী বিদ্রোহ থেকে শুরু করে ১৯০৯ পর্যন্ত বন্দিদের বেশির ভাগই ছিলেন মুসলিম। কিন্তু ১৯০৯ কেন? কারণ সে সময় সেলুলার জেলে যান সাভারকাররা দুই ভাই। তাঁদের নাম রাখতে হবে তো!
আগের তালিকায় কে কতদিন বন্দি ছিলেন, তার উল্লেখ ছিল। নতুন তালিকায় নেই। এই হচ্ছে স্বাধীনতা যোদ্ধাদের প্রতি সঙ্ঘ-বাড়ির সম্মানবোধ! ভক্ত-দল এসব সত্য জানে না। জানার চেষ্টাও করে না। কিছু লোক নাচায়। ওরা নাচে। খালি লাফায়! অসহ্য!
তালিকায় সবচেয়ে বেশি নাম বাংলা আর পঞ্জাবের বিপ্লবীদের। দেখুন, দেশভাগের ফলে দেশের এই দুই প্রদেশই শুধু টুকরো হয়েছে। ব্রিটিশের ডিভাইড অ্যান্ড রুল নীতির হাতে গরম প্রমাণ। তাকে হাওয়া দিয়ে গেছে আরএসএস, হিন্দু মহাসভা, মুসলিম লিগ।
সেলুলার জেলে বন্দিদের নতুন তালিকার প্রথমেই বম্বে প্রদেশের তিন জনের নাম, দুই সাভারকার ভাই আর দাজিনারায়ণ যোশী।চরম নির্লজ্জতা!
এরাই দেশপ্রেমের বরাই করে! কমিউনিস্টদের দেশদ্রোহী বলে বেড়ায়। তাহলে সেলুলার জেলের বেশির ভাগ বন্দি কেন কমিউনিস্ট পার্টিতেই যোগ দিলেন? কেন কেউ আরএসএসের ঘরে গেলেন না? কেন স্বাধীন দেশে স্বাধীনতা আন্দোলনের বিভিন্ন ধারার লোকেরা গেলেন কমিউনিস্ট পার্টিতে?
ইতিহাসকে বিকৃত না করে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে না সঙ্ঘ পরিবার। তাই মুসলিমদের মতো আর্যরাও বহিরাগত একথা যেমন বেবাক চেপে যাওয়া হয়, তেমনই চেপে যাওয়া হয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্ঘ পরিবারের বইমানির কথাও। আর এখন সেলুলার জেলের বন্দিদের তালিকা থেকে বাঙালি মুসলিম, কমিউনিস্টদের নাম বেছে বেছে বাদ দেওয়া হচ্ছে। আর নির্লজ্জ ভক্তকূল দেশপ্রেমের বগল বাজাচ্ছে।
কুট্টিদাদু ওপার বাংলা থেকে এপারে এসে মাথা গোঁজার ঠাঁই জোটাতে উদ্বাস্তু আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। তাঁর স্যাঙ্গাত ছিল আমার বাবা। আজাদ-গড়ে উদ্বাস্তু-লেঠেল বাহিনীর তিন পাণ্ডার একজন ছিল বাবা।
![]() |
| নতুন ১৪ নম্বর ফলকে কুট্টিদাদুর নাম |
কুট্টিদাদু ওপার বাংলা থেকে এপারে এসে মাথা গোঁজার ঠাঁই জোটাতে উদ্বাস্তু আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। তাঁর স্যাঙ্গাত ছিল আমার বাবা। আজাদ-গড়ে উদ্বাস্তু-লেঠেল বাহিনীর তিন পাণ্ডার একজন ছিল বাবা।
কুট্টিদাদু মৃত্যুর দিন পর্যন্ত ছিলেন সিপিআইএমের কলকাতা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। আমি রাজনীতি করার সময় দেখেছি দীপাদি (দীপা রায়), জ্যেঠিমা (স্নেহ গুহ), তিমির কাকু (তিমির রায়)-দের পরিচিত ছিল কুট্টিদাদু আর বাবা। দীপাদি, জ্যেঠিমা আমাদের আজাদগড়েও আসতেন। (চলবে)









