link text

Breaking Posts

6/trending/recent

Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

চলছে কেমন গড়গড়িয়ে...পর্ব-১ #Agnipath#Bulldozer#Prophet_row

হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় অশান্তি
আমার এক সহকর্মী আছে। ধরে নিন, তাঁর নাম উজ্জ্বল চক্রবর্তী। বয়সে আমার চেয়ে ছোট। নানা বিষয়ে লেখাপড়ায় আমার থেকে বিস্তর এগিয়ে। ধরে নিন, উজ্জ্বলের বাড়ি মেদিনীপুরে। উইকলি অফের আগের দিন কলকাতা থেকে বাইক চালিয়ে মেদিনীপুর যায়। ওখানে ওঁর মা থাকেন। উজ্জ্বল ধার্মিক মানুষ। স্বামী বিবেকানন্দ এবং জ্যোতি বসু, এই দুজন তাঁর কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। 

নূপুর শর্মার (Nupur Sharma) মন্তব্য ঘিরে সাম্প্রতিক অশান্তিতে যুক্তদের বাড়ি  বুলডোজার দিয়ে ভাঙছে যোগী আদিত্যনাথ (Bulldozer Baba) সরকার। তা নিয়েই কয়েকজন সহকর্মী কথা বলছিল। খানিকটা দূরে বসে শুনছিলাম। 

অবরুদ্ধ বোম্বে রোড
উজ্জ্বল যোগীর পদক্ষেপের পক্ষে। ওঁর যুক্তি, নবীর অসম্মানের প্রতিবাদে হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় যা হয়েছে (Howrah Unrest) তাতে ওকে খুব ভুগতে হয়েছে। অনেক বেশি রাস্তা ঘুরে মেদিনীপুর যেতে হয়েছে। গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিক হিসেবে এই দুর্ভোগ তো পোহানোর কথা নয়। 

কথাটার মধ্যে যুক্তি খানিকটা আছে। তার চেয়েও বেশি আছে, রাগ-বিরক্তি। আমার মতে, সেটা থাকাটাই স্বাভাবিক। যিনি ভুগবেন তাঁরই রাগ হতে বাধ্য।

'বুলডোজার বাবা' যোগী আদিত্যনাথকে উপহার
উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ 'নিয়ম' করেছেন, গ্যাংস্টারদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হবে। তার সঙ্গে আছে 'এনকাউন্টার'। এখন বলছেন হিংসা বা দাঙ্গায় অভিযুক্তদের বাড়িও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। শুধু বলছেন না, তাঁর প্রশাসন সে কাজ শুরুও করে দিয়েছে। 

নূপুর শর্মার মন্তব্য ঘিরে সাহারানপুরে অশান্তিতে মূল অভিযুক্ত মুজাম্মিল ও আব্দুল ওয়াকির। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পুরকর্মীরা তাঁদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দিয়েছেন। যদিও বলা হচ্ছে, বেআইনি নির্মাণ ভাঙ্গা হয়েছে। 

কানপুরের অশান্তিতে মূল অভিযুক্ত জাফর হায়াত হাসমির আত্মীয় মহম্মদ ইসতিয়াকের নবনির্মিত বাড়ি ভেঙে দিয়েছেন পুরকর্মীরা। কেন? কানপুরের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (আইনশৃঙ্খলা) আনন্দপ্রকাশ তিওয়ারি বলেছেন, 'ওই সম্পত্তিতে মূল অভিযুক্তের বিনিয়োগ ছিল বলে মনে হচ্ছে।' মানে এখানে বেআইনি নির্মাণের ঘোমটাটাও টানা হল না। কিন্তু জাফর তো অভিযুক্ত, তিনি যে যুক্ত ছিলেন, সেটা কে প্রমাণ করবে? আত্মীয়ের বাড়িতে তিনি টাকা ঢেলেছেন, তারও তো কোনও প্রমাণ নেই। স্রেফ পুলিশের 'মনে হচ্ছে'। ব্যস, তাতেই বাড়ি ভেঙে দেওয়া হল। 

প্রয়াগরাজে বুলডোজারের ধ্বংসলীলা 
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতা উমর খালিদের কথা মনে আছে? উমর এখনও জেলে। তাঁর বাবা এস কিউ আর ইলিয়াস তৈরি করেছেন 'ওয়েলফেয়ার পার্টি অব ইন্ডিয়া'। প্রয়াগরাজে ওই পার্টির নেতা জাভেদ মহম্মদ। (Bulldozing in Prayagraj) তাঁর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরসভা বলছে, বেআইনি নির্মাণ ছিল। ভাঙার নোটিশ আগেই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ওই বাড়ির জলকর ও পুরকর দেওয়া। বাড়ি বেআইনি হলে তো সেটা হওয়ার কথা নয়। আরও মজার ব্যাপার, জাভেদকে নোটিশ দিয়ে বাড়ি ভাঙ্গা হয়েছে, কিন্তু বাড়ির মালিক তাঁর স্ত্রী। মুসলিম সম্পত্তি আইনে স্ত্রীর সম্পত্তির মালিক স্বামী হতে পারেন না। মানে পুরসভার কাজই বেআইনি। প্রয়াগরাজে অশান্তিতে মূল অভিযুক্ত হিসেবে জাভেদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

বিক্ষোভে অভিযুক্তদের শায়েস্তা করতেই যে বুলডোজার নামানো হয়েছে, সেটা স্পষ্ট যোগীর মিডিয়া অ্যাডভাইসর মৃত্যুঞ্জয় কুমারের পোস্টে। বুলডোজারের ছবি দিয়ে তিনি টুইট করেছেন, 'গোলমাল করছে যারা, তাদের মনে রাখতে হবে, প্রতি শুক্রবারের পরেই শনিবার ঠিক আসবে।' যোগীর প্রাক্তন মিডিয়া অ্যাডভাইসর, বিজেপির বিধায়ক শলভমনি ত্রিপাঠীর পোস্ট করা ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে, ধৃত কয়েক জনকে পুলিশ মারছে। সঙ্গে লেখা, 'বিদ্রোহীদের রিটার্ন গিফট।' যোগী সরকারের মন্ত্রী ও রাজ্য বিজেপি সভাপতি স্বতন্ত্র দেও সিং-ও অভিযুক্তদের ঘরবাড়ি ভাঙতে বুলডোজার চালানোর পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন।

অভিযুক্ত মানে তো দোষী নন। অভিযুক্ত যে দোষী সেটা তো আদালতে প্রমাণ হওয়ার কথা। সে সবের বালাই নেই। শাসক দল মনে করল, পুলিশ মনে করল, ব্যস যা খুশি তাই করা হল। এটাকে গুন্ডারাজ বলে। 

আফরিন ফতিমা
জাভেদের মেয়ে আফরিন ফতিমা জেএনইউ-র ছাত্রী। তাঁর মন্তব্য, 'সব সময় মুসলিমদেরই নিশানা করা হচ্ছে। মুসলিমদের বিরুদ্ধে অমানবিক পদক্ষেপ করে ওঁরা মজা পান। কিন্তু ওঁদের এই আনন্দ পেতে দেব না আমরা। যতই যাই করুক, আমরা চোখের জল ফেলব না।'
আফরিনের কথাটা ফেলে দেওয়ার মতো নয়।

দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরীতে বুলডোজার-হামলা
দিল্লিতে রামনবমীর মিছিল ঘিরে অশান্তির পর বুলডোজার হামলা হয়েছিল জাহাঙ্গীপুরীর বাঙালি মুসলমানদের বাড়িতে। কী আশ্চর্য, সেখানে অশান্তি ছড়ানো কোনও হিন্দুর বাড়িতে বুলডোজার গেল না! সেদিন ওই রাস্তা দিয়ে তিনটি শোভাযাত্রা যায়। 
প্রথম দুটোর পুলিশি অনুমতি ছিল। তৃতীয় শোভাযাত্রার অনুমতি চাওয়া হয় রামনবমীর ঠিক আগের দিন। পুলিশ অনুমতি দেয়নি। প্রথম দুটো শোভাযাত্রায় কোনও অশান্তি হয়নি। বরং স্থানীয়রা অভ্যর্থনাই জানান। তৃতীয় শোভাযাত্রা মসজিদের সামনে থামিয়ে অশান্তি বাধানো হয়।
 
দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরীতে বুলডোজার-হামলা
তার মানে আমার সহকর্মী উজ্জ্বলের রাগ-বিরক্তি মূল্যহীন? বলি কী করে? উজ্জ্বল ধার্মিক মানুষ। উজ্জ্বল অ-সাম্প্রদায়িক মানুষ। মুসলিমদের সম্পর্কে কোনও ঘৃণা বা বিদ্বেষ ওর নেই। 

তাহলে?                                                           (চলবে)

দ্বিতীয় পর্ব

https://jachchetaii.blogspot.com/2022/06/agnipathbulldozerprophetrow.html

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

5 মন্তব্যসমূহ
Keya Ghosh বলেছেন…
পরের পর্বের অপেক্ষা থাকলো..
Rudrani বলেছেন…
ডেন্জারাস কম্বিনেশন, বিবেকানন্দ আর জ‍্যোতি বসু। বেশ। অপেক্ষায় রইলাম।
নামহীন বলেছেন…
Apnar colleague আনন্দবাজারের মেদিনীপুরই বিশেষ পোষক কুলের এক ব্যক্তি, অসাম্প্রদায়িক মোটেই নয়, পাক্কা মাঁকিখোকা gonuman।এরা শুধু সুযোগের অপেক্ষায় থাকা rapeendorser।
SUJOY বলেছেন…
আইনের কথা , Notice এর কথা দেখলাম । প্রশ্ন হলো আইন মেনে কাজ করলে বা সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিলে একটা জমায়েত বা train এ আগুন লাগালে ব্যবস্থা নিতে পারতো বা পারে । একটা লোক ও রাস্তা দখল করে ব্যবসা করতে পারে না । আর প্রতিবাদ এর নামে Vandalism জে চলছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না । সরকারের অধীনে পুলিশ আছে । পুলিশের হাতে বন্ধুক নেই না সেই বন্দুকে গুলি নেই ? আর Bull dozer ব্যবহার করা হয়েছে সেটা তো ভালো । প্রাণগুলো যাচ্ছে না অন্তত । বিভিন্ন শীর্ষ নেতাদের Tweet কি আগুনে ঘি ঢালছে না ? ??
Subhasis Chatterjee বলেছেন…
এই প্রসঙ্গে আনন্দ বাজারে দিন কয়েক আগে দীপঙ্কর ভট্টাচার্য একটা লেখা লিখেছিল, পড়ে নিতে পার। মন্দ হচ্ছে না। চালিয়ে যাও আর পয়সা কামাও।

Top Post Ad